করোনার থাবায় এই মুহূর্তে থরহরিকম্প গোটা বিশ্ব। এখনও পর্যন্ত এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ১৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা ৮৯০০০ ছুঁইছুঁই। তবে করোনা প্রাণে মারছে যত, ভাতে মারছে তার চেয়ে অনেক বেশি। এই মহামারির জেরে ভারতে কাজ হারাতে পারেন অসংগঠিত ক্ষেত্রের ৪০ কোটি শ্রমিক। বুধবার এমনই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন আইএলও। সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা ঠেকাতে জারি করা লকডাউনের প্রভাব পড়বে সমগ্র বিশ্বের ২৭০ কোটি শ্রমিকের ওপর। লকডাউনের কারণে অনেক দেশেই অসংগঠিত ক্ষেত্রের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের রুটিরুজি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তবে এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ভারত, ব্রাজিল ও নাইজেরিয়ায়।
প্রসঙ্গত, ভারতে ৯০ শতাংশ শ্রমিকই কাজ করেন অসংগঠিত ক্ষেত্রে। লকডাউনের পর তাঁদের বেশির ভাগই নিজেদের গ্রামে ফিরে গেছেন। এই সব শ্রমিকের স্বাস্থ্য-পরিষেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রায় কিছুই নেই। যদি সরকারের তরফে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তা হলে কাজ হারিয়ে এঁরা আরও বেশি গরিব হয়ে পড়বেন এবং পরে নতুন করে কাজ খুঁজে পাওয়া এঁদের পক্ষে কঠিন হবে। আইএলও জানিয়েছে, এখন পুরো বা আংশিক লকডাউনের অধীনে রয়েছেন ২৭০ কোটি শ্রমিক। এবং এঁরা বিশ্বের মোট শ্রমিক-সংখ্যার ৮১ শতাংশ।
২০২০ সালের ১ এপ্রিলের হিসেব অনুযায়ী, লে-অফের কারণে চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে কাজ হারাবেন ২০ কোটি পুরো সময় কর্মরত শ্রমিক। বিশ্বের মোট কর্মরত শ্রমিকদের ৩৮ শতাংশ কিংবা ১২৫ কোটি কাজ করেন খুচরো ব্যবসা, আবাসন, খাদ্য পরিষেবা এবং ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে। করোনার কারণে এসব শিল্পে উৎপাদন দারুণ ভাবে কমেছে এবং ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে। যেসব দেশে বিশ্বের মোট শ্রমিকের ৮১ শতাংশ রয়েছেন, সেই সব দেশে হয় মালিকেরা সংস্থা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন কিংবা তাঁদের বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে করোনার প্রভাব পড়েছে বিশ্বের মোট ৩৩০ কোটি শ্রমিকের ওপর।