দেশজুড়ে চলতে থাকা টানা লক ডাউন ইতিমধ্যেই সরকারের রাজস্ব আদায়ের উপর বড়সড় আঘাত হেনেছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি উন্নয়ন কর্মসূচি বজায় রাখা নিয়েই তাই উদ্বেগে নবান্ন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানালেন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
পরিবহণ, পর্যটন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘দিদি, ভাইরাস চলে যাওয়ার পর মন্দার রাক্ষস অপেক্ষা করে আছে। আমরা আগামী দেড় বছরেও কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারব বলে মনে হয় না!’ জবাবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, ‘শুধু তো বাংলার ব্যবসায়ীরা নন, সারা দেশ, সারা পৃথিবীর অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে। এর মধ্যেই আমাদের সবটা করতে হবে। আগে তো মানুষের জীবন। প্রাণটাই যদি না থাকে তাহলে বাকি কোনওকিছুর মূল্যই থাকবে না। আমাদের মানবিক হয়ে এবং একজোট হয়েই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।’
প্রত্যেক ব্যবসায়ী সংগঠনই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছে, রাজ্যের করোনা ইমার্জেন্সি রিলিফ ফান্ডে তাঁরা টাকা দেবে। কিন্তু দিদি তাঁদের বলেন, ‘আপনারা যা টাকা দেবেন বলছেন তার পঞ্চাশ শতাংশ আমাদের রিলিফ ফান্ডে দিন। আর বাকি পঞ্চাশ শতাংশ আপনাদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা শ্রমিক, কর্মচারীদের বেতন দিতে খরচ করুন। ওটাও মানুষের কাজেই লাগবে।’ এছাড়াও ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স রিনিউর সময় মার্চের ৩১ তারিখ থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, সমস্যা না মিটলে অনলাইনে লাইসেন্স রিনিউ করারও ব্যবস্থা করবে সরকার।
এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে চা বাগান খোলার জন্য অ্যাডভাইজারি পাঠিয়েছিল। দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন কালিম্পঙে করোনা সংক্রমণের জন্য চা বাগানের শ্রমিকরা কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন। যদিও এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মোট শ্রমিক সংখ্যার ১৫ শতাংশ নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চা বাগান চালানো যেতে পারে। তবে তা যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, চা পাতা এখন না তুললে পরের বছর আর ফলন হবে না। তাই কিছুটা বাধ্য হয়েই বাগান চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।