করোনা উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও এক রোগীকে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছিল। আর করোনা আক্রান্ত সেই যুবকের মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের টনক নড়তেই তড়িঘড়ি এনআরএস-এর চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট ৮৫ জনকে জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। সংক্রামক ভাইরাস আদৌ তাঁদের শরীরে বাসা বেঁধেছে কি না তা নিয়ে তৈরি হয় সংশয়। তারপরই একে একে প্রত্যেকের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। সেই রিপোর্ট হাতে আসার পরই মিলল স্বস্তি। বুধবার সকালে আরও ৪০ জনের পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসে। কারও শরীরে মেলেনি করোনা ভাইরাসের নমুনা। এর আগে আরও ৩০ জনের করোনা রিপোর্টও নেগেটিভ আসে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ মার্চ মহেশতলার বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সি এক যুবক এনআরএস হাসপাতালে ভরতি হন। দিনদুয়েক পর ১ এপ্রিল রাতে তাঁর নানা উপসর্গ ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই রোগীর উপসর্গের কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। অভিযোগ, নিয়ম মেনে তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়নি। পরিবর্তে ওই যুবককে রাখা হয় আইসিইউতে। পরেরদিনই যুবকের নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে ওই যুবক মারা যান। রিপোর্ট হাতে আসার পরই জানা যায় ওই যুবক করোনা আক্রান্ত। তারপরই তাঁর সংস্পর্শে আসা ৮৫ জনকে পাঠানো হয় কোয়ারেন্টাইনে। সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতাল।
কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ৩০ জন এবং বুধবার আরও ৪০ জনের রিপোর্ট হাতে আসে। মোট ৭০ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাকি ১৫ জনের রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে সকলেই। যদিও একদল বিশেষজ্ঞের দাবি, ওই যুবকের মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের পরীক্ষা করা হয়েছে। তার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ঠিকই। তবে ওই ৭০ জনের শরীরে পরবর্তীকালে যে করোনার উপসর্গ দেখা যাবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও ৭০ জনকে আপাতত কোয়ারেন্টাইনেই থাকতে হবে। অন্যদিকে, বাকি ১৫ জনের রিপোর্ট আদৌ কি হয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।