করোনার থাবায় এই মুহূর্তে থরহরিকম্প গোটা বিশ্ব। এখনও পর্যন্ত এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ মানুষ। মৃতের সংখ্যা ৭৫০০০ ছুঁইছুঁই। তবে করোনা প্রাণে মারছে যত, ভাতে মারছে তার চেয়ে অনেক বেশি। যেহেতু এই মারণ ভাইরাস সামাল দিতে কার্যত ঘরবন্দী গোটা পৃথিবী, তাই এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হচ্ছে অর্থনীতি। বাদ নেই ভারতও। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো দেশজুড়ে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। যার ফলে দেশের অর্থনীতিতে নেমেছে ধস। হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা।
তথ্য বলছে দেশের বড় শহরগুলিতে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০.৯ শতাংশ। যার ফলে ভারতজুড়ে বেকারত্বের হার ছুঁয়ে ফেলল ২৪.৪ শতাংশ। পরিস্থিতি যে ক্রমশ ভয়াবহ ভয়াবহ হয়ে উঠছে তা অস্বীকার করছেন না অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যেমন সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সি এম আই ই) যে সমীক্ষা চালিয়েছে তাতে ৫ এপ্রিলের পর নতুন সপ্তাহ শুরু হতেই প্রকাশ্যে আনা হয়েছে এক নয়া তথ্য। যা রীতিমতো ভয়ের আভাস দিচ্ছে গোটা দেশকে।
সি এম আই ই-র দাবি অনুযায়ী মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে বেকারত্বের হারটা যেখানে ৮.৪ শতাংশ ছিল, এপ্রিলের শুরুতেই সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩.৪ শতাংশ। তথ্য বলছে লকডাউনের প্রথম দুই সপ্তাহেই ভারত জুড়ে প্রায় ৫ কোটি লোক কর্মহীন হয়েছেন। বহু মানুষকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে চলেছে। সেটা কয়েক দিনের মধ্যেই প্রকাশ্যে চলে আসবে।
এ প্রসঙ্গে জহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির প্রফেসর হিমাংশুর দাবি, বেকারত্বের এই পরিসংখ্যান অনেক ক্ষেত্রেই অনুমানের উপর ভিত্তি করে গঠন করা হয়। তবে সে অনুমানটা বেশিরভাগটাই সঠিক। লকডাউন উঠে গেলেও বেকারত্বের হার জারি থাকবে দেশজুড়ে। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ভারতবর্ষের এক তৃতীয়াংশ মানুষ দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমজীবী। তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেলে সেটা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলবে অর্থ ব্যবস্থার ওপর। ফলে লকডাউন উঠে গেলে সরকারের উচিত অবিলম্বে এই শ্রেণীর মানুষগুলিকে সহায়তা করা।