রাত ৯টা বাজার অধীর অপেক্ষা। একটু আগে থেকেই অনেকে ঘরের আলো বন্ধ করে প্রদীপ, মোমবাতি নিয়ে উঠে পড়লেন ছাদে। ইতিউতি দু-একটি বাজি ফাটানো শুরু হলেই বোঝা যায় ৯টা বেজে গিয়েছে। জ্বলে উঠল প্রদীপ, মোমবাতি। আকাশে উড়তে থাকে চিনা আগুন বেলুন। ঘড়ির কাঁটা ৯টা পার হয়ে যত এগিয়েছে, শুরু হয়ে গেছে কান ঝালাপালা করে দেওয়া বাজির দাপট। দেখে মনে হওয়ার জো নেই যে, এটি দীপাবলি নয়। কে বলবে প্রতিটি মিনিটে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। কে বলবে এক চরম সময় সংকটে। বায়ু এবং শব্দ দূষণকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যেভাবে কাল বাজি ফাটল তা দেখে স্তম্ভিত সকলে। প্রশ্ন উঠছে লকডাউনের এই সময়ে এত বাজি এল কোথা থেকে?
আগেই আশঙ্কা করা গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে মানুষ শুধু মোমবাতি ও প্রদীপ জ্বালানোর মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখবেন না। অত্যুৎসাহী বহু মানুষ নিজেদের এককাঠি ওপরে তুলে নিয়ে গিয়ে ফাটাবে দেদার বাজি। আর হলও তাই। করোনা সচেতনতার জন্য সরকারি উদ্যোগে যে নির্দেশিকা মানুষ মেনে চলছে, এদিন সে সব যেন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। আতঙ্কের এই আবহে মানুষ কেন যে বাজি ফাটাল, তার কোনও উত্তর নেই কারও কাছে। পাশাপাশি, এত অল্প সময়ের মধ্যে মানুষ কোথা থেকে এই বাজি জোগাড় করল, নেই সেই উত্তরও।
লকডাউনের জন্য এই ক’দিন আকাশ যতটা নির্মল হয়েছিল, এদিন দিকে দিকে নাগাড়ে বাজি ফাটার কারণে আবার দূষণের চাদরে ঢেকে গেল। এখন প্রশ্ন, এত বাজি এই অল্প সময়ের মধ্যে মানুষ পেল কোথা থেকে? লকডাউনের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাইরে আর কোনও দোকান খোলা নেই। বাজি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আওতায় পড়ে না। আবার কোনও মানুষ বাড়িতে বাজি মজুতও করে রাখে না। তা হলে এত অল্প সময়ের মধ্যে এদিন যে বিপুল বাজি ফাটল, সেই বাজি মানুষ জোগাড় করল কোথা থেকে? উঠতে শুরু করেছে এই প্রশ্ন।