করোনার থাবায় এই মুহূর্তে থরহরিকম্প গোটা দেশ। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে যখন ঢাল-তরোয়াল অর্থাৎ পর্যাপ্ত মাস্ক, প্রোটেক্টিভ অ্যাপ্রন, গ্লাভস ছাড়াই করোনার বিরুদ্ধে সর্বস্ব দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের ডাক্তার, নার্স বা অনান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। তখন বিদেশে মেডিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট ও সেফটি গিয়ার্স পাঠাচ্ছে ভারত! দিন কয়েক আগেই এই খবর সামনে আসতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল দেশবাসী। এরই মধ্যে অদূর ভবিষ্যতে আসতে চলা সঙ্কটের কথা জানালেন দিল্লীর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দিল্লীর নিজামউদ্দিনে বিপুল জমায়েতের কারণে কোভিড-১৯ পজিটিভের সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এত রোগীর চিকিৎসার করার সরঞ্জামের যেমন ঘাটতি পড়ছে, তেমনি ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণ ঠেকানোর বিশেষ পোশাক, পিপিই, মাস্ক সবই প্রায় কমতির দিকে। দিল্লীর হাসপাতালগুলিতে আর ২-৩ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুপমেন্ট বা পিপিই পোশাক। এ নিয়েই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শনিবার দিল্লীর স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সংগ্রহে ৭০০০-৮০০০ পিপিই আছে। তবে এই স্টক ফুরিয়ে যেতে বসেছে। হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলিতে রোগীর ভিড় বাড়ছে। জরুরি অবস্থায় আরও ৫০ হাজার পিপিই দরকার।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন আরও বলেছেন যে, নিজামউদ্দিনের ধর্মীয় জমায়েতের পরেই গত দু’দিনে অন্তত ৬০০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। হিসেব বলছে, এখনও অবধি ৩৮৬ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মধ্যে ২৫৯ জনের যোগ রয়েছে তবলঘি জামাতের সঙ্গে। এদের সংস্পর্শে থেকে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রয়োজনমতো পর্যাপ্ত পরিমাণে পি৯৫ মাস্ক, গ্লাভসের অভাব রয়েছে, তার ওপর শেষ হতে বসেছে পিপিই। সংক্রমণ স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলে মেডিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়েছিলেন জোট সঙ্গী তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। মোদীকে নীতিশ বলেন, আমরা ৫ লক্ষ পিপিই কিট চেয়েছিলাম, কিন্তু পেয়েছি ৪,০০০। ১০ লক্ষ এন-৯৫ মাস্কের জায়গায় মিলেছে মাত্র ১০,০০০। অন্যদিকে, ১০ লক্ষ পিআই মাস্কের বদলে মিলেছে মাত্র এক লক্ষ। একই সঙ্গে তিনি আরো জানান, ১০০ টিভি লেটার চাওয়া হলেও এখনো পর্যন্ত মিলেনি একটিও।