ভারতে করোনা আতঙ্ক একধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে দিল্লীর নিজামুদ্দিনে তবলঘি জামাতের ধর্মীয় সমাবেশের ঘটনা। কারণ ইতিমধ্যেই ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দেওয়া ৬ তেলেঙ্গানার বাসিন্দা ও ১ ধর্মপ্রচারক করোনায় মৃত্যু হয়েছে। শুধু তাই নয়। ওই তাবলিঘি জামাতে যোগদানকারীদের মধ্যে অধিকাংশই করোনা আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। যার ফলে এই মুহুর্তে দেশের অন্যতম কোভিড-১৯ হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত নিজামুদ্দিনের আশপাশের এলাকায় আতঙ্কও ছড়িয়েছে বিস্তর। এমনকী সামাজিক বয়কটের মুখেও পড়তে নিজামুদ্দিনের কালে খান বস্তির হাজারো মানুষকে।
কালে খান বস্তি থেকেই দিল্লির বর্ধিষ্ণু এলাকায় গাড়ির চালক, গৃহপরিচারিকা, আয়া হিসেবে কাজ করতে যান বহু মানুষ। করোনা আতঙ্কে কাজ তো গিয়েছেই। উল্টে সরাসরি সামাজিক বয়কটের মুখে বস্তিবাসীরা। ঘর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতেও যেতে পারছেন না তাঁরা। অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাতেও বেরোতে পারছেন না। যেমন নাদিম নামের এক যুবক গতকাল দুপুরে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন ডাক্তার দেখাতে যাবেন বলে। কিন্তু যে আন্ডারপাস দিয়ে বস্তি থেকে মূল রাস্তায় বেরোতে হয় সেখানেই অবরোধ। নাদিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কোনও গাড়ি না পেয়ে স্ত্রীকে হাঁটিয়েই নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্ত আন্ডারপাসের মুখেই কয়েকজন আমায় আটকে দেন। বলে দেওয়া হয়, ওদিকে যাওয়া যাবে না। অনেক অনুরোধ করলেও ওরা যেতে দেয়নি।’
একই অবস্থা কালে খান বস্তিতে থাকা এক বাঙালি মহিলার। মালা নামের ওই মহিলা গৃহসহায়িকার কাজ করেন। গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে কাজ বন্ধ। এপ্রিলের শুরুতে মাইনেও আনতে যেতে পারেননি। অর্থসঙ্কটে জর্জরিত মালা বলছেন, ‘বাড়িতে দু’তিনদিনের শুকনো খাবার আছে। তারপর জানি না কী হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জমানো যতটুকু টাকা আছে তা দিয়ে যে চাল-ডাল আনব তারও উপায় নেই। ওরা যেতে দিচ্ছে না।’ এমনই অসংখ্য ঘটনার কথা তুলে ধরেছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। আর তারপরই দিল্লী পুলিশের তরফে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, মানুষ যাতে ওষুধপত্র, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পান তার ব্যবস্থা করা হবে।