ক্রিকেট ইতিহাসে ডিএলএস মেথডের অন্যতম জনক টনি লুইস (৭৮) বুধবার রাতে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর বয় হয়েছিল ৭৮ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণেই তিনি মারা যান বলে জানা গিয়েছে। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) তরফে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘টনি লুইস আর আমাদের মধ্যে নেই। তবে ক্রিকেট জগত তাঁকে কোনও দিনই ভুলবে না। এই খেলার সঙ্গে চিরকাল ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকবে তাঁর নাম।’ লুইসের পরিবারকে শোকবার্তাও পাঠানো হয়েছে ইসিবি’র পক্ষ থেকে।
চলে গেলেন ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির অন্যতম আবিষ্কর্তা টনি লুইস। সীমিত ওভারের ক্রিকেটকে নতুন পথ দেখিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিল এই জুটি। যা ভেঙে গেল বৃহস্পতিবার সকালে। শুধু রয়ে গেল তাঁদের আবিষ্কার। যা স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছিল ক্রিকেটপ্রেমী ও ক্রিকেটারদের মনে।
ডিএলএস মেথডের নেপথ্যে ছিলেন ডাকওয়ার্থ, লুইস এবং স্টেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত একদিনের ম্যাচে ফয়সালার জন্য ১৯৯৯ সাল থেকে ডিএলএস মেথডকে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে আইসিসি। পরবর্তীকালে বৃষ্টিবিঘ্নিত টি-২০ ম্যাচেও প্রয়োগ করা হয় এই নিয়ম। ওই ‘ত্রয়ী’ এই মেথডটি আবিস্কার করেন ১৯৯৭ সালে। দুই বছরের মধ্যে আইসিসি বিভিন্ন দিক খুঁটিয়ে দেখে এই নিয়মকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। লুইসের মতো বাকি দু’জনও গণিত বিশারদ। তিন জনের মধ্যে ডার্কওয়ার্থ বেশি কথাবার্তা বলতেন। লুইস ছিলেন তুলনায় চুপচাপ। ডিএলএস মেথড আবিস্কারের ক্ষেত্রে মূল্যবান ভূমিকা পালনের জন্য ২০১০ সালে লুইসকে ‘মেম্বার অফ দ্য অর্ডার অফ ব্রিটিশ এম্পায়ার’ সম্মানে ভূষিত করা হয়।
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমি-ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের মধ্যে সিডনিতে আয়োজিত ম্যাচে এক অভিনব এবং বিতর্কিত ঘটনা ঘটে। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময়ে ইংল্যান্ডকে হারাতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১৩ বলে ২২ রান। আইসিসি’র পূর্ব প্রচলিত নিয়মে বৃষ্টির পর ওভার সংখ্যা কমিয়ে খেলা শুরু হলে দেখা যায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ১ বলে ২১ রান করতে হবে। এই ‘অসম্ভব’ কাজটি দক্ষিণ আফ্রিকা স্বভাবতই করতে পারেনি। নাটকীয় ম্যাচে ফাইনালে চলে যায় ইংল্যান্ড। আইসিসি’র নিয়ম নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। তারপর এই গণিত বিশারাদরা নতুন মেথড সামনে আনেন, যা দু’বছরের মধ্যে গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠে বিশ্ব ক্রিকেটে।