শারীরিকভাবে তিনি অক্ষম। ভাল করে দাঁড়াতে তো পারেনই না, এমনকি বসার ক্ষমতাও তাঁর নেই। তবে মানসিকভাবে তিনি অনেকটা সক্ষম। শারীরিক ক্ষমতা না থাকলেও, রয়েছে অদম্য ইচ্ছাশক্তি। আর সেই শক্তির জোরেই করোনা যুদ্ধে সামিল হলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের শ্রীপর্ণা নন্দী। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য করেছেন তিনি। তাঁর সাহায্য পেয়ে খুশি প্রশাসনিক আধিকারিকরাও।
আর পাঁচটা শিশু যখন ধীরে ধীরে হাঁটতে শিখেছে, শ্রীপর্ণা তখনও বিছানায় শুয়ে। তাঁর সমবয়সিরা যখন খেলাধুলো করত, তখন সে উঠে বসার কসরত করত। কোনওদিন সবুজ ঘাসের উপর দৌড়নো হয়নি। স্কুলের পোশাক পরে আর পাঁচজনের মতো স্কুলের খেলায় যোগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু মনে ছিল অদম্য জোর। পড়াশোনা শিখে নিজেকে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে, এই ভাবনা কোনওদিন পিছু ছাড়েনি তাঁর। গত বছর প্রায় বিছানায় শুয়ে শুয়ে মাধ্যমিক দিয়েছিলেন শ্রীপর্ণা। পেয়েছিল ৬৫ শতাংশ নম্বর।
বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শ্রীপর্ণার মানসিক জোর অবাক করেছিল রাজ্য সরকারকে। হাজার বাঁধাকে তুচ্ছ করে তাঁর এগিয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে সেইসময় পাশে পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৬ হাজার টাকা স্কলারশিপ পান তিনি। সেই টাকা দিয়েই পড়াশোনার খরচ চালান গড়বেতা থানার সারদামণি বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শ্রীপর্ণা।
সেই শ্রীপর্ণাকেই বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছে। মারণ ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধের মোকাবিলায় ২০০ কোটি টাকার ত্রাণ তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপদের দিনে রাজ্যের পাশে দাঁড়িয়েছেন শ্রীপর্ণা। মারণ ভাইরাসের মোকাবিলায় নিজের স্কলারশিপের টাকা থেকে ১০০০ টাকা সাহায্য করেছেন তিনি। শ্রীপর্ণার এহেন কাজে তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ।