করোনা মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গোটা দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। আর তার জেরেই রাজ্যে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে আদালতের কাজকর্ম। এমনকী বিচারধীন বন্দীদের জামিন সংক্রান্ত শুনানিও হচ্ছিল না। ক্ষোভ ছড়িয়েছিল বারুইপুর ও দমদমের কেন্দ্রীয় সংশোধানাগারে। আর তারপরই কলকাতা হাইকোর্ট কমিটি গড়ে দিয়েছিল বিচারধীন বন্দিদের জামিন ও প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে। সেই কমিটির সিদ্ধান্তের জেরেই এবার ৩ হাজারেরও বেশি বন্দীকে রাজ্যের ৬০টি সংশোধানাগার থেকে ৩ মাসের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। সোমবার থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে গিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত, রাজ্যের কারা সচিব এবং কারা দফতরের ইনস্পেক্টর জেনারেলকে নিয়ে তৈরি ওই কমিটি মোট ৩০৭৬ জন বন্দীকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই বন্দীদের মধ্যে ২,০৫৯ জন বিচারাধীন বন্দী এবং ১০১৭ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। রাজ্যের কারা দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, খুন, ধর্ষণ, নোট জালিয়াতি, দেশবিরোধী কার্যকলাপ, মাদক চালান, বা পকসো মামলায় অভিযুক্ত ছাড়া বাকি যারা আছে তাঁদের নামই এই প্যারোলে মুক্তি পাওয়া বন্দীদের তালিকায় রাখা হয়েছে।
এছাড়াও এই তালিকায় নাম রয়েছে যে সমস্ত মামলায় সাজার মেয়াদ ৭ বছরের কম সেই মামলায় অভিযুক্ত বিচারাধীন বন্দীদের ও সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক যারা ইতিমধ্যেই ১০ বছরের ওপর কারাবাস করে ফেলেছেন তাঁদের নাম। বস্তুত এদের মুক্তি দেওয়ার পিছনে আর একটা বড় কারণ হল সংশোধানাগারে যাতে কোনও ভাবেই করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করা। এমনিতে সংশোধানাগারে বাইরের লোকেদের সঙ্গে কারও মেলামেশা করার কোনও সুযোগ নেই। তবুও বাড়তি সতর্কতা স্বরূপ আদালতের ঠিক করে দেওয়া কমিটির সিদ্ধান্তকে বাস্তব রূপ দিতে বিন্দুমাত্র দেরি করল না রাজ্য সরকার।