তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার জনগণের কাব্যে তিনি কাজের মানুষ, আবার কাছেরও মানুষ। দিনভর হাজারও কাজের ব্যস্ততা সামলেও কাব্যচর্চা তাঁর অবসরের সঙ্গী। শুধু তাইই নয়, যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে নিজের কলম দিয়েই মনের কথা প্রকাশ করেন। তাই লিখে চলেন একের পর এক কবিতা। কখনও মনের আনন্দে, কখনও বা জনসচেতনতা, কখনও আবার বার্তা দিতে। এর আগে নোটবন্দী, এনআরসি-সিএএ’র মতো গুরুগম্ভীর বিষয় নিয়েও গর্জে উঠেছিল তাঁর কলম। এবারও তাই হল। আর এবারের বিষয়বস্তু করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯।
মুখ্যমন্ত্রী লেখা কবিতার নাম– কোভিড ১৯। তিনি লিখেছেন–
বস্তাপচা ময়লায় ঢেকে গেছে পৃথিবীটা
মানুষ, মানুষ থেকে দূরে।
ছোঁয়া যাবে না – স্নেহের পরশকে।
কালও যা ছিল –
হাতের ছোঁয়ায় আশীর্বাদ,
আজ তা পরশমণির
স্পর্শ থেকে বাদ।
এ কি ভয়ার্ত বেশ…
সারা বিশ্ব এক থেকে অন্যে-
সন্দিহান অবকাশের নিশিরাত্রি!
মাত্র দুমাসের পৃথিবীর
হাওয়া বদল!
দেখা হল কথা হল না!
মনটায় মেঘের ছায়া,
চুলগুলো উদভ্রান্ত!
কারো সাথে দেখা হল-
কথা হচ্ছে না।
সারা পৃথিবীটা-
বদলে গেল।
বদলে গেল মানসিকতা-
সবাই দূরে দূরে।
দূরের দূরত্বটাই আজ সবচেয়ে বেশি ভরসার।
সারা বিশ্ব আজ বিশ্ব পণ্ডিত!
কিন্তু পারলো না-
একটা ভাইরাসকে দমন করতে?
হার মানলো সারা বিশ্ব?
সবার মুখ দেখা
সবার জন্য বন্ধ।
সব গবেষণাকে
জব্দ করলো
একটা মাত্র শব্দ
করোনা, কোভিড ১৯।
আজ সন্ধের পর নিজের ফেসবুক দেওয়ালে এই কবিতাটি শেয়ার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকে লাইক, শেয়ারের বন্যা। বোঝাই যাচ্ছে, এই যে লক ডাউন চলছে, জাতির স্বার্থে এমন একটা কড়া সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করছেন তিনি। কিন্তু মানুষে-মানুষে দূরত্ব, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় ‘সামাজিক দূরত্ব’ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তা মুখ্যমন্ত্রীকেও ছুঁয়ে গিয়েছে মনের গভীর থেকে।