গত পরশু রাত ১২ টা বাজার পর থেকেই গোটা দেশে করোনা সংক্রমণ রুখতে চলছে লকডাউন। তার মধ্যেই তেলেঙ্গানা-অন্ধ্রপ্রদেশ সীমানায় আটকে পড়েছেন বহু মানুষ। তাঁদের অধিকাংশই পড়ুয়া। নিজের রাজ্যে ঢোকার জন্য তেলেঙ্গানা সরকার অনুমতি দিলেও অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ-প্রশাসন তাঁদের ঢুকতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ মিলেছে। তাঁদের কাছে নির্দেশ নেই, এই যুক্তিতে ‘পাস’ দিতে নারাজ অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ-প্রশাসন। ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেও খাবার, পানীয় জলের সঙ্কটে কোনওরকমে দিন কাটছে তাঁদের।
হায়দ্রাবাদ শহরের বিভিন্ন থানার সামনে লম্বা লাইন। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ঠায় দাঁড়িয়ে বা বসে রয়েছেন তাঁরা। আবার অন্ধ্রপ্রদেশ-তেলেঙ্গানা সীমানাতেও ঠিক একইরকম পরিস্থিতি। প্রচুর যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে। অপেক্ষায় প্রচুর মানুষ। অভিযোগ, অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ তাঁদের নিজের রাজ্যে ঢুকতে দিচ্ছে না। অন্ধ্র পুলিশের বক্তব্য, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার অনুমতি নেই।
কিন্তু আটকে পড়া পড়ুয়া ও অন্যান্যদের দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেই জানানো হয়েছে, ঘরে ফেরার জন্য পুলিশ-প্রশাসন ‘পাস’ দেবে। কিন্তু পুলিশ আধিকারিকরা বলছেন, তাঁদের কাছে নির্দেশ নেই। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির অতিরিক্ত সচিব পি ভি রমেশের বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছেন যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকতে, তখন তেলেঙ্গানা সরকার কেন তাঁদের পাস দিচ্ছে?’ আবার তেলেঙ্গানার এক প্রশাসনিক আধিকারিক বলেছেন, হায়দ্রাবাদের ছাত্রাবাসগুলি স্বাভাবিক ভাবেই চলবে। ফলে পড়ুয়ারা সেখানে থাকতে পারবেন।
এই সঙ্কটে সরকারকে সাহায্যের আর্জি জানিয়ে এক পড়ুয়া বলেছেন, ‘অন্তত এই পর্যন্ত যত লোক আটকে আছেন, তাঁদের ঘরে ফেরানোর অনুমতি দিন। বিদেশে আটকে পড়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী (জগনমোহন রেড্ডি) বিমান পাঠিয়েছেন। আর আমাদের নিজের বাড়ি ঢুকতে দিচ্ছেন না।’ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী তেলঙ্গানায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪১। অন্য দিকে অন্ধ্রপ্রদেশে সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে ১১ জনের। অশোক নামে এক পড়ুয়া ঘটনাস্থল থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বহু পড়ুয়া বাড়ি ফিরতে চাইছেন। সকাল থেকে সবাই অপেক্ষা করে আছেন। কিন্তু অন্ধ্রপ্রদেশে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।’