পৃথক করোনা-হাসপাতাল তৈরির চিন্তাভাবনা আগেই শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। সেই অনুযায়ী কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে প্রথমে পৃথক করোনা ওয়ার্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে, পরে গোটা মেডিক্যাল কলেজেই করোনা চিকিৎসায় হবে বলে জানানো হয়। দেশের প্রথম করোনা হাসপাতাল হিসেবে নাম উঠে আসে মেডিক্যাল কলেজের। কিন্তু পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করেই এবার নিউ টাউনে আরও একটি পুরোদস্তর করোনা হাসপাতাল খুলল মমতা সরকার।
রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটকেই করোনা হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে এবার থেকে। করোনা মোকাবিলায় দেশের সব রাজ্য সরকারকেই হাসপাতালের ব্যবস্থা করতে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ভারতে করোনা হানা দেওয়ার পর থেকে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীনে থাকা রাজারহাটের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে। এবার সেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারকেই হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করবে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই ৩০ জন নার্স, ২জন টেকনিশিয়ান, চিকিৎসক, দু’জন ডেপুটি নার্সিং সুপার, একজন নার্সিং সুপার-সহ প্রায় ৫০ জন কর্মীকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। ওই হাসপাতালে থাকছে ৫০০টি বেড।
করোনা সংক্রমণ কিন্তু ধীরে হলেও বাড়ছে। গোড়ার দিকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণে বা কোভিড নাইনটিনে আক্রান্তরা অসুখটা বিদেশ থেকে আনছিলেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই তাঁদের থেকে ওই সংক্রমণ কলকাতায় স্থানীয় স্তরে ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে। বালিগঞ্জের বাসিন্দা, বিলেত ফেরত তরুণের থেকে যে তাঁর মা, বাবা ও পরিচারক সংক্রমিত হয়েছেন, তার প্রমাণ মিলেছে রবিবার। তার পর থেকেই গোষ্ঠী সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। আগামী দু’ সপ্তাহে যদি আচমকা বহু গুণে বেড়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা, তা হলে তাঁদের চিকিৎসার ফলে যাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য রোগীরা ঝুঁকির কবলে না-পড়েন, তাই চিনের মতো পৃথক করোনা-হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে রাজ্যে।
অপরদিকে, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালেও বেড সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৮০। সেখানে ১০০টি বেড করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, কলকাতার ৩১টি হোটেলকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। কোনও ব্যক্তি নিজে যদি কোয়ারেন্টাইনে থাকতে চান, তাহলে নিজের অর্থে সেখানে থাকতে পারবেন। তবে, মানতে হবে সমস্ত সরকারি নির্দেশিকা।