গোটা দেশে যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাই সেই আশঙ্কায় দেশের বেশিরভাগ রাজ্যগুলিতেই লকডাউনের ঘোষণা করা হয়েছে গতকালই। বাংলার পৌরশহরগুলিতেও সোমবার বিকেলে থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। আর স্কুল-কলেজে তো তালা পড়েছে বেশ কয়েকদিন আগেই। করোনার ভয়ে সচেতন হয়েছেন অনেক মানুষও। ঠিক এই পরিস্থিতির মধ্যে সচেতনতার বড্ড অভাব দেখা গেল তেহট্টের একটি বেসরকারি স্কুলে। সমস্ত নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে সোমবার সেখানে বিতরণ করা হল মার্কশিট। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়া জেলার তেহট্টের হাউলিয়া পার্ক মোড়ের কাছে অবস্থিত হোলি এঞ্জেলস নামে একটি বেসরকারি স্কুলে। ঘটনাটির কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রবল বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্টের ওই বেসরকারি স্কুলে গতকাল সকাল ন’টা থেকে স্কুলের মার্কশিট দেওয়া শুরু হয়। স্কুলের এই আচরণকে কেন্দ্র করে স্কুলের অভ্যন্তরে এবং অভিভাবকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। দেশের এই বিপর্যয়ের দিনে কেন মার্কশিট দেওয়া হচ্ছে? কিছুদিন পরে দিলে কী এমন ক্ষতি হত? করোনা ভাইরাস নিয়ে এইসময় প্রত্যেক মানুষ আতঙ্কিত। কেউ মাস্ক কিনতে ব্যস্ত, কেউ আবার স্যানিটাইজার বা হ্যান্ডওয়াশ কিনতে ব্যস্ত। রীতিমতো বেশ কিছুদিন গৃহবন্দি হয়ে থাকতে চান সাধারণ মানুষ। কিন্তু, সোমবার ওই বেসরকারি স্কুল তাঁদের সমস্ত আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।
অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, যেখানে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত স্কুল, কলেজ ও অফিস বন্ধ করার বার্তা দিয়েছেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কথা বলেছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে ওই বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের কী ভেবেছেন? তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, প্রশাসনের তরফে যেখানে বলা হচ্ছে জমায়েত এড়ানোর কথা। সেখানে ওই বেসরকারি স্কুলের মার্কশিট দেওয়াকে কেন্দ্র করে কি অভিভাবকদের জমায়েত হবে না?
যদিও স্কুলের প্রিন্সিপাল ম্যানুয়েল মণ্ডল জানান, তাঁদের আগে থেকেই বলা ছিল সোমবার অর্থাৎ ২৩ তারিখ মার্কশিট দেওয়া হবে। সেইজন্যই মার্কশিট দেওয়া হচ্ছে। তবে এদিন সেভাবে স্কুল চত্বরে অভিভাবকদের জমায়েত হতে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে তেহট্টের বিডিও অচ্যুতানন্দ পাঠক বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সচেতনতা দরকার। ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি কিন্তু যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি। পরবর্তীতে এমন কাজ যেন না হয়, সেদিকে নজরদারি চালানো হবে।’