গোটা বিশ্বের কাছেই এখন আতঙ্কের আরেক নাম সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত করোনা। ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী হামলা চালিয়ে ১৩ হাজারের ওপর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। কিন্তু দিবারাত্রি নিরলস চেষ্টা করেও এখনও পর্যন্ত করোনাকে জব্দ করার প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি চিকিৎসা বিজ্ঞান। তবে এর মাঝেই আশার আলো দেখাচ্ছেন ফ্রান্সের এক দল গবেষক। তাঁদের দাবি হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিনেই নাকি বশ্যতা মানছে করোনা।
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিনের যুগলবন্দি করোনাকে কাবু করেছে বলে মত সেই গবেষকদের। পরীক্ষামূলক ভাবে তাঁরা চিনে কয়েকজন করোনার আক্রান্তদের শরীরে এই ওষুধ প্রয়োগ করেছেন। তাঁরা গত পয়লা মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন ৬০০ মিলিগ্রাম করে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন দিয়েছেন রোগীদের শরীরে। প্রতিদিন হাসপাতালে তাঁদের ন্যাসোফ্যারাইঞ্জিল সোয়াব দিয়ে পরীক্ষার পর রোগীর শরীরের অবস্থা বুঝে অ্যাজিথ্রোমাইসিন দেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্য করে দেখা গেছে যে ২২ জনের শরীরে করোনার প্রভাব কমেছে। যদিও কম সংখ্যক মানুষকে নিয়ে এই ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে, কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার যে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মিশেল করোনাকে থিতিয়ে দিয়ে বা পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে। এই ইতিবাচক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল এজেন্সি ফর ড্রাগ সেফটি (এএনএসএম) অনুমোদন করেছে। ফ্রেঞ্চ এথিকস কমিটিও খতিয়ে দেখে অনুমোদন করেছে। যদিও এখনও অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি রয়েছে।
অন্যদিকে, করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে কোভিড-১৯ পরীক্ষা কিট আবিষ্কারের দোরগোড়ায় আইআইটি দিল্লীর গবেষকরা। একদম কম খরচে দেশের বৃহৎ সংখ্যক মানুষের করোনার প্রাথমিক স্ক্রিনিং পরীক্ষা করাতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনজির গবেষকদের আবিষ্কৃত এই পদ্ধতি খতিয়ে দেখছে পুনে স্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভিরোলজি। আইআইটি দিল্লীর মতে যে হারে ভারতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণ, তাতে দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি স্ক্রিনিং কিট বাজারে আসা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আইআইটি গবেষকদের দলের প্রধান অধ্যাপক বিবেকানন্দ পেরুমাল দাবি করেছেন, কমপ্যারেটিভ সিক্যুয়েন্স অ্যানালিসিস করে তাঁরা বেশ কিছু ইউনিক রিজিয়ন কোভিড-১৯-এ আবিষ্কার করেছেন যা আর কোনও মানব করোনা ভাইরাসে নেই। একবার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভিরোলজির অনুমোদন পেয়ে গেলে দ্রুত এই আবিষ্কার ব্যবহারের জন্যে ছাড়া যাবে।