করোনা আক্রান্ত হয়ে আজ রাজ্যে প্রথম মৃত্যু হয়েছে। দমদমের আক্রান্ত প্রৌঢ় প্রয়াত হয়েছেন আজ দুপুরেই। তাঁর বিদেশ যাওয়া বা বিদেশ থেকে ফেরার অতীত ছিল কি ছিল না তা নিয়ে গত কয়েকদিনে তৈরি হয়েছিল বিস্তর ধোঁয়াশা। কিন্তু এদিন করোনা নিয়ে ডাকা নবান্নে সর্বদলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন, ওই প্রৌঢ় এবং তাঁর পরিবার ইতালি থেকে ফিরেছিলেন।
এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে সেইসময় বক্তব্য রাখছিলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তারপরই সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলতে যাওয়ার আগেই এসএমএস আসে মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে। সঙ্গে সঙ্গে সূর্যবাবুকে থামিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, আমার কাছে এই মাত্র খবর এল, সল্টলেকে দমদমের যে ভদ্রলোক ভর্তি ছিলেন, তিনি মারা গেছেন। সুজন চক্রবর্তী কিছুটা চমকে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, কে মারা গেছেন? জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দমদমের যে পরিবারটা কয়েকদিন আগে ইতালি থেকে ফিরেছিল। ওই পরিবারের যিনি ভর্তি ছিলেন। উনিও ইতালি থেকে ফিরেছিলেন।’
ইতিমধ্যে প্রশাসনের একাংশের মধ্যে গুঞ্জন যে ওই ব্যক্তির পরিবারের এক সদস্য ইতালি থেকে সম্প্রতি এসেছিলেন। তবে পরিবারের তরফ সে কথার সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট জানালেন, ইতালি যোগ ছিল ওই গোটা পরিবারের।
প্রথমে জানা গিয়েছিল বিদেশ যোগ ছাড়াই করোনা আক্রান্ত হন এই প্রৌঢ়। তখন আশঙ্কা বেড়ে যায় মানুষের মধ্যে। অনেকেই বলতে শুরু করেন তাহলে কি বাংলাতে করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেল। কিন্তু এদিন স্পষ্ট করে দেওয়া হল মুখ্যমন্ত্রীর তরফে, করোনা আক্রান্ত পরিবার ইতালি থেকে ফিরেছিলেন।
শুকনো কাশির সমস্যা নিয়ে গত ১৩ মার্চ থেকে ভুগছিলেন দমদমের ওই ব্যক্তি। তার পর কাশি ও শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকায় তাঁকে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তিন দিন হাসপাতালে ডাক্তারদের পর্যবেক্ষণে থাকার পরেও তাঁর উপশম বিশেষ হয়নি। বরং শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। ১৯ মার্চ শ্বাসকষ্ট বেড়ে এমনই হয় যে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখতে হয়। পরে তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেড এবং এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো। তাতেই পজিটিভ রেজাল্ট ধরা পড়ে।