শেষ কয়েকদিনে ভারতে যে হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে তাতে দুশ্চিন্তা কয়েকগুন হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রবিবার জনতা কার্ফু পর এবার লকডাউনের রাস্তায় হাঁটছে দেশ। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কলকাতা-সহ সারা দেশের ৭৫টি জেলায় লকডাউন প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই মতোই সোমবার বিকেল ৫ টা থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলায় সাড়ে ৪ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। আর নির্দেশিকা জারির পরই প্রশাসনের তরফে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, লকডাউনের নিয়ম ভাঙা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফলত আইন ভাঙলে শাস্তি অনিবার্য।
এখন অনেকেরই প্রশ্ন হল, লকডাউন কী? এর উত্তরে বলা।যায়, লকডাউন হল নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং জরুরি পরিষেবার বাইরে থাকা যাবতীয় কার্যকলাপ বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশ। বাংলায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে বিজ্ঞপ্তি রবিবার বিকেলে জারি করা হয়েছে, তাতে যদিও ‘লকডাউন’ শব্দের পরিবর্তে ‘কমপ্লিট সেফটি রেস্ট্রিকশন’ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই নিরাপত্তা বিধিনিষেধ কার্যত লকডাউনই। যে কারণে ২৩ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে ২৭ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত রাজ্যে পূর্ণ নিরাপত্তা বিধিনিষেধ জারি থাকবে। এই সময় হাসপাতাল, দমকল, পুলিশের মতো জরুরি পরিষেবা-ব্যবস্থা চালু থাকবে। ব্যাঙ্কিং জরুরি পরিষেবা হওয়ায় তার উপর লকডাউন জারি হয়নি।
শুধু তাই নয়। লকডাউন ঘোষণা হলেও এর থেকে দুধ, সবজি, পানীয় জলের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যকে বাদ রাখা হয়েছে। এমনকী, মুদি দোকান, মাছ, মাংসের মতো দোকানপাটও খোলা থাকবে। তাই মজুতের কোনও প্রয়োজন নেই। লকডাউনের বাইরে রাখা হয়েছে পেট্রল পাম্প। এ রাজ্য পেট্রল পাম্প সকাল সাতটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পেট্রল পাম্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে লকডাউনের সময় কতটা সময় পাম্প খোলা রাখা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন।
অন্যদিকে, লকডাউন ভাঙলে রয়েছে শাস্তির ব্যবস্থাও। আইন অনুযায়ী, জোরপূর্বক কেউ যদি লকডাউনের নীতি অমান্য করেন সেক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ১৮৮, ২৬৯, ২৭০, ২৭১ ধারায় মামলা হবে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে প্রযোজ্য হবে ১৮৮ ধারা। ২৬৯ ধারা সংক্রামক ব্যাধি ছড়ানোর বিরুদ্ধে, যা জামিন অযোগ্য। ২৭০ নম্বর ধারাও জামিন অযোগ্য, জীবনের পক্ষে বিপজ্জনক এমন সংক্রমণ ব্যাধি ছড়ানোয় এই ধারা প্রযোজ্য। এতে ২ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। কোয়ারেন্টাইনের আইন ভাঙলে বলবৎ হবে ২৭১ ধারা।