আগামী ৫ দিনের জন্য পুরোপুরি বন্ধ হতে চলেছে রাজ্যের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। প্রায় সব পুরসভা এবং পুর এলাকা নয় এমন একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ ‘টাউন’-এও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার অর্থাৎ ২৩ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে শুক্রবার অর্থাৎ ২৭ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন বলবৎ থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং জরুরি পরিষেবার বাইরে থাকা যাবতীয় কার্যকলাপ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সাড়ে চার দিন রাজ্যে সব রকমের গণপরিবহণও বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করেছে নবান্ন।
আগামী এই ৫ দিন কোথাও জেলা সদর, কোথাও পুর এলাকা, কোথাও পুরো জেলা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। সম্পূর্ণ এলাকা লকডাউন হচ্ছে রাজ্যের সাতটি জেলা। সেই তালিকায় রয়েছে উত্তরবঙ্গের দুই জেলা উত্তর দিনাজপুর, ও মালদহ। দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে রয়েছে কলকাতা ও হাওড়া-সহ মুর্শিদাবাদ, নদীয়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কলকাতা ও হাওড়ার ক্ষেত্রে অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের উপস্থিতি এবং বিদেশ ফেরতদের সংখ্যাধিক্যের কথা মাথায় রেখে পুরো জেলা লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যান্য জেলাগুলির ক্ষেত্রে ভিন রাজ্যের সীমানা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তের বিষয়টি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সম্পূর্ণ জেলার ক্ষেত্রে আলাদা করে উল্লেখ না করা হলেও বাকি জেলাগুলির সব জেলা সদর শহরে লকডাউন করা হচ্ছে। এ ছাড়া আলিপুরদুয়ারের জয়গাও, দার্জিলিংয়ের শিলিগুড়ি ও কার্শিয়াং শহর, বীরভূমের সমস্ত পুর শহর, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া ও কালনা, বাঁকুড়ার বড়জোড়া ও বিষ্ণুপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর ও ঘাটাল, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া, দীঘা, কোলাঘাট ও কাঁথি, হুগলির চন্দননগর, কোন্নগর, আরামবাগ, শ্রীরামপুর ও উত্তরপাড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং, সোনারপুর, ভাঙড়, বজবজ ও মহেশতলা, উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউন ও সল্টলেক ছাড়াও সমস্ত পুরসভা এলাকা।
তবে লকডাউন বা ‘কমপ্লিট সেফটি রেস্ট্রিকশন’ সফল করতে একগুচ্ছ বিধি-নিষেধের কথা এ দিন ঘোষণা করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। বাস, অটো, ট্যাক্সি-সহ প্রায় গোটা গণপরিবহণ ব্যবস্থাকেই সোমবার বিকেল থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। থানা, সংশোধানাগার, আদালত চালু থাকলেও অন্য অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে এই ৫ দিন। রাজ্যের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, দোকান-বাজারও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু খাবার, দুধ, সবজি, ওষুধ-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্রের দোকান আর হাসপাতাল ও চিকিৎসা পরিকাঠামো খোলা থাকবে। টেলিকম, ইন্টারনেট, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, পানীয় জল সরবরাহ, জঞ্জাল অপসারণ পরিষেবাও ছাড় পাচ্ছে। ছাড় পাচ্ছে সংবাদমাধ্যমও।