গোটা দেশে ক্রমশই ছড়াচ্ছে মারণ করোনা ভাইরাস। প্রায় প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে সিংহ ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে বিদেশ থেকে আসা লোকজনের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে নানা এলাকায়। এর সব থেকে ভালো নমুনা মিলেছে মহারাষ্ট্র ও বাংলায়। দুই রাজ্যের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন এই মারণ ভাইরাসে, তাঁরা হয় বিদেশ থেকে সদ্য দেশে ফিরেছেন বা এমন কারোর সংস্পর্শে এসেছেন যারা সদ্য সদ্য বিদেশ থেকে ফিরেছেন। এই বিদেশ ফেরত মানুষগুলিকে নিয়েই এখন চিন্তা বাড়ছে কেন্দ্র সরকারের। কারণ বার বার এঁদের বিদেশ থেকে ফিরে বাড়িতে থাকতে বলা হলেও তা মানছেন না এঁরা। জানা গিয়েছে, এই সমস্যার সমাধানে এবার হোম কোয়ারেন্টাইন নিয়ে কড়া নীতি আনতে চলেছে কেন্দ্র সরকার।
দেশে এখনও বিদেশ থেকে বিমানের আসা-যাওয়া বন্ধ হয়নি। তার জেরে বাইরে থেকে লোকজন আসার প্রক্রিয়াও চলছে। বিদেশ থেকে আসা মানুষদের বার বার বলা হচ্ছে তাঁরা যেন বিদেশ থেকে ফিরে অন্তত ১৪ দিন নিজের বাড়িতেই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই কথা ঠিক ভাবে মানছেন না তাঁরা। তাই কেন্দ্র সরকার এবার পদক্ষেপ নিতে চলেছে যে, হোম কোয়ারেন্টাইন ভাঙলে ছয় মাসের পর্যন্ত জেল হতে পারে। সেই সঙ্গে হতে পারে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও।
দেশে করোনা ঠেকাতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন বিদেশ থেকে যে বা যারা ফিরেছেন এবং যারা বিদেশে না গিয়েও নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কারোর সংস্পর্শে এসেছেন তাঁরা যেন অন্তত ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। কিন্তু সেই উপদেশ অগ্রাহ্য করে অনেকেই বিদেশ থেকে ফিরে ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ রাজ্যেও করোনায় আক্রান্ত হওয়া কলকাতার দুই তরুণই একই কাজ করেছেন। এই প্রবণতা রুখতে এবার কঠোর মনোভাব নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘আমরা রাজ্যগুলিকে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছি। নভেল করনো ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া আটকাতে আমাদের কঠোর হতেই হবে। এই সময় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। ভালো কথায় যদি কাজ না দেয় তখন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। ১জনের জন্য তো আর ১০০ জনের জীবনের ঝুঁকি নেওয়া যায় না।’ প্রসঙ্গত, গতকাল রাজ্যের তরফেও জানানো হয়েছিল, কেউ স্ব-ইচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে না গেলে সরকার তাঁর ওপর বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হবে।