দীর্ঘ সাত বছরের প্রতীক্ষার পর শেষপর্যন্ত বিচার পেল নির্ভয়া। শুক্রবার ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ভোর ৫.৩০ মিনিটে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হল ২০১২ সালে ধর্ষণে দোষীসাব্যস্ত চারজনকে। আর এরপরই নির্ভয়ার মা বলছেন, ‘দেশের মেয়েরা আজ বিচার পেল।’
দীর্ঘ টালবাহানার শেষে চতুর্থ বারের জন্য ঘোষণা হয়েছিল ফাঁসির তারিখ। এর আগে যেভাবে তিন-তিন বার ফাঁসির তারিখ পিছিয়েছে, তাতে সন্দেহ ছিল এই বারও ফাঁসি হবে কিনা। আশঙ্কা ছিল, ফের কোনও আইনি ফাঁক বার করে সুযোগ নিতে পারে অপরাধীরা। সে চেষ্টাও চলেছিল বিস্তর। ফাঁসির দু’দিন আগে থেকেই শুরু হয় একের পর এক আবেদন। এমনকি ফাঁসির ঠিক আগের রাতেও মাঝরাত থেকে শুরু হয় মহানাটক। কিন্তু উত্তেজনার পারা চড়িয়েও, শেষমেশ কোনও অপ্রত্যাশিত রায় আসেনি আদালতের তরফে। নির্ধারিত সময় ও সূচি মেনেই ফাঁসির জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়। ফাঁসি হয়েও যায় ঠিক সময়ে।
সেই ফাঁসি, যার জন্য আট বছর ধরে লড়াই করছে নৃশংসতম উপায়ে ধর্ষিত এক তরুণীর পরিবার। সেই ফাঁসি, যার জন্য আট বছর ধরে প্রতীক্ষা করে রয়েছে দেশের প্রায় প্রতিটা মানুষ। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নিশ্চিত মৃত্যুর পথে শেষ হয়ে গেল নির্ভয়া গণধর্ষণ ও খুনের মামলার চার অপরাধী পবন গুপ্ত, মুকেশ সিং, অক্ষয় ঠাকুর ও বিনয় শর্মা। পঞ্চম অপরাধী রাম সিং ধরা পড়ার কিছু দিন পরেই আত্মহত্যা করেছিল। ষষ্ঠ অপরাধী নাবালক হওয়ায় ছাড়া পেয়েছে কয়েক বছর সংশোধনাগারে থেকে।
ফাঁসির কয়েক ঘণ্টা আগে নতুন করে সাজা রদের আর্জি নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্ভয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের চার দোষী। মাঝরাতেই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে পৌঁছলেন নির্ভয়া দোষীদের আইনজীবী এপি সিং। শুনানিও শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু শেষমেশ কোনও আবেদনই ধোপে টেকেনি।