মিল্লি আল আমিন কলেজের অভ্যন্তরীণ সমস্যা বেশ পুরনো। কাটবে মাটবে করেও কাটছে না জট। এই পরিস্থিতিতেই বুধবার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিচালন সমিতির সদস্যদের বিকাশ ভবনে বৈঠকে ডেকেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর সেখানেই বাঁধল বিপত্তি। বুধবার বিকাশ ভবনে হওয়া ওই বৈঠকে তাঁকে সাংঘাতিক অপমানিত হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। খোদ শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছেন তিনি। তবে পার্থ সেই অভিযোগ একেবারেই নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর মন্তভ, ‘বৈশাখীকে আমি যথেষ্ট স্নেহ করি এবং গুরুত্ব দিই। তাঁর কেন এ রকম মনে হয়েছে, আমি জানি না।’
প্রসঙ্গত, বৈশাখী যে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা, সেই মিল্লি আল আমিনে দীর্ঘ দিন ধরে অচলাবস্থা চলছে। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা হিসেবে মেনে নিতে কলেজটির পরিচালন সমিতি নারাজ। শিক্ষা দফতর তথা শিক্ষামন্ত্রী প্রকাশ্যে অন্তত বৈশাখীর পাশে দাঁড়ানোর বার্তাই দিয়ে এসেছেন বার।বার। কিন্তু একের পর এক বৈঠকেও সমাধান সূত্র অধরাই থেকেছে। ‘শিক্ষামন্ত্রী যদি সত্যিই চাইতেন যে, কলেজটার এই অচলাবস্থা কেটে যাক, তা হলে কি অচলাবস্থা এত দিন ধরে বহাল থাকতে পারত?’ আগেও একাধিক বার এই প্রশ্ন তুলেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মঙ্গলবার তিনি তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সরাসরি ‘অপমান’ করার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
বিকাশ ভবনে গতকালের বৈঠকে মিল্লি আল আমিন কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্যরা ছিলেন। ছিলেন অধ্যক্ষা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেখানেই বৈঠক চলাকালীন পরিচালন সমিতির সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার বাদানুবাদ তুঙ্গে ওঠে বলে খবর। সেই বাদানুবাদ থামাতে গিয়েও শিক্ষামন্ত্রী পরিচালন সমিতির পক্ষই নেন এবং অধ্যক্ষাকে ‘নমনীয়’ হওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানা গিয়েছে। আর তাতেই বৈশাখী চটেছেন বলে খবর।
এ নিয়ে পার্থ বলেন, ‘সমস্যা যদি মেটাতে না চাইতাম, তা হলে এত বার ওই কলেজকে নিয়ে আমি বৈঠকে বসব কেন? কোনও শিক্ষামন্ত্রী কখনও একটা কলেজের সমস্যা মেটানোর জন্য এত সময় ব্যয় করেছেন? এর পরেও যদি কারও মনে হয় যে, আমি সমস্যা মেটাতে চাইছি না, তা হলে তিনি আমাকে ভুল বুঝছেন।’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ‘অল্পেই অভিমান করেন’ এবং ‘অভিমান’ থেকেই তিনি এই রকম অভিযোগ তুলছেন বলেও মন্তব্য করেন পার্থ। তাঁর সাফ কথা, ‘কলেজের সমস্যায় যে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের রক্ষক হিসেবে আমি কাজ করেছি, তাঁর সঙ্গে আমি শত্রুতা করছি বলে যদি কেউ অভিযোগ করেন, তা হলে আমি সে কথার জবাব দিতে চাই না। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানেন, আমি কী কী করেছি।’