আপাতত স্বস্তি মিলেছে লন্ডন ফেরত সেই তরুণের মা-বাবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টে। জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত তরুণের মা-বাবা ও গাড়ির চালকের নমুনা পরীক্ষায় এখনও ভাইরাস মেলেনি। তাঁদের ৫টির মধ্যে ৪টি পরীক্ষার ফলই নেগেটিভ। অর্থাৎ, এখনও ভাইরাসের উপস্থিতি নেই তাঁদের শরীরে। তবে আইডি’র ডাক্তারদের মতে, সেই ৩ ব্যক্তিকে এখনও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তারপর ফের একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে তাঁদের।
এদিকে, রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ আমলার পরিবার যেই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন, তা দেখে আর একটুও ঝুঁকি নিতে চাইছে না নবান্ন কর্তৃপক্ষ। এমনকি প্রয়োজনে বাংলা জুড়ে বা নির্দিষ্ট কোনও ছোট বা বড় এলাকায় করোনা ঠেকাতে চীনের মতো লক ডাউনের পথে হাঁটতেও রাজি আছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে সেই প্রস্তুতিও কার্যত সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজন হলেই রাজ্য সরকার রাজ্যের যে কোনও এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করে দিতে পারে। এবং তা যে কোনও মুহুর্তে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, খোদ নবান্নের আমলার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যভবনকে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা যেন আত্মতুষ্টিতে না ভোগেন। যদি দেখা যায় একজনের থেকে বহুজনের করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তাহলে তা যেন দ্রুত নবান্নের শীর্ষস্তরের প্রশাসনের নজরে আনা হয়। যদি দেখা যায় একটি গ্রাম বা শহরের নির্দিষ্ট এলাকা বা পাড়ায় একাধিক করোনা সংক্রামকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তাহলে সেই এলাকা বা পাড়ায় ‘লোকাল লক ডাউন’ ঘোষণা করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে এই লক ডাউনের এলাকার সীমা বাড়িয়ে তা গোট শহর বা গ্রাম, ব্লক, মহকুমা ও জেলা জুড়েও যাতে করা যায় তার প্রস্তুতিও সাঙ্গ করে ফেলা হয়েছে সরকারের তরফে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘এখনই আমরা ব্যাপক সংক্রমণ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নই। তবে সাবধানের মার নেই। তাই স্থির হয়েছে, যে কোনও মূল্যে ঠেকাতেই হবে এই গোষ্ঠী সংক্রমণ। নজরদারিতে জোর দিয়ে ঠিক যে ভাবে করোনার প্রকোপ হওয়া ইস্তক টানা ৬৭ দিন আমরা করোনা-মুক্ত ছিলাম, অনেকটা সে ভাবেই গোষ্ঠী সংক্রমণ আটকাতে নজরদারিতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। তবে এত কিছুর পরও যদি কোনও এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণের প্রমাণ মেলে, তখন দ্রুত তার চারপাশে যাতে লোকাল লকডাউন করা যায়, প্রশাসনিক স্তরে সে প্রস্তুতি আমরা সেরে ফেলেছি। প্রয়োজনে সেনা, পুলিশ সব ব্যবহার করা হবে।’