গত রবিবার তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন। আর তারপর মঙ্গলবার বেলেঘাটা আইডি-তে ধরা পড়ে লন্ডন ফেরত ওই তরুণের শরীরে নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে। তারপরই ওই যুবককে বেলেঘাটা আইডি-র আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয় ওই তরুণের পরিবারের সবাইকে ও গাড়িচালকেও।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই ক্ষোভে ফুঁসছেন ওই তরুণের পরিবার যে আবাসনে থাকেন, তার বাসিন্দারা। তাঁদের স্পষ্ট কথা, লন্ডন থেকে ফেরার পর চৃড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করেছেন ওই তরুণ ও তাঁর পরিবার। জানা গিয়েছে, রবিবার এয়ারপোর্টে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের পর তাঁকে বেলেঘাটা আইডি-তে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও বিমানবন্দর থেকে সোজা মায়ের সঙ্গে বাড়ি চলে আসেন। তারপর সোমবার সকালে আবাসনে বেরিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলেন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও দেন।
সেখান থেকে বাড়ির লোকের সঙ্গে এম আর বাঙুর হাসপাতালে যান। অভিযোগ, মায়ের প্রভাব খাটিয়ে জোর করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসক দেখান তিনি। সেখান থেকেও তাঁকেও বেলেঘাটা আইডি-তে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই তরুণ সাফ জানায়, ‘আমি ভর্তি হব না।’ এরপরই মায়ের সঙ্গে নবান্নে আসেন ওই তরুণ। নবান্নে ঘোরাফেরা করেন। এমনকি তারপর মায়ের সঙ্গে মহাকরণেও যান। জানা যাচ্ছে, তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে ওই তরুণ শপিং মলে যান। পাশাপাশি, আরও জানা যাচ্ছে পার্ক স্ট্রিটের একটি ক্লাবেও গিয়েছিল ওই তরুণ।
পার্ক স্ট্রিটের ক্লাবে ওই তরুণের যাওয়ার খবর সামনে আসতেই পুলিশ ইতিমধ্যে ওই ক্লাবে গিয়ে পৌঁছেছে বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে, সোমবার নবান্নে গিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরেও গিয়েছিলেন ওই তরুণ। এরপরই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে, সতর্কতা মেনে আজ থেকে স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে যান সস্ত্রীক আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এদিকে, জানা যাচ্ছে রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত তরুণের বাবা সরকারি চিকিৎসক। কৃষ্ণনগর পুরসভায় গত সোমবার ও মঙ্গলবার পর্যন্তও রোগী দেখেছেন তিনি। তারপরই সেখানকারও ২-৩ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। গোটা ঘটনায় ওই তরুণ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে উঠেছে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ। খোদ মুখ্যমন্ত্রীও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে।