এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বজুড়েই আতঙ্কের নাম নভেল করোনা। যে মারণ ভাইরাসের তাণ্ডবে চীন-সহ বিভিন্ন দেশেই অব্যাহত মৃত্যুমিছিল। সম্প্রতি ভারতের থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। যা নিয়ে দেশবাসী এখন থরহরিকম্প। তবে করোনা মোকাবিলায় বাংলার সরকারের কাজে যে গর্বিত বোধ করছে কেন্দ্র, সে কথা কয়েক দিন আগেই জানিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদান।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জানুয়ারি করোনা ঢোকে ভারতে। প্রথম খোঁজ মেলে কেরালায়। তারপর থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত টানা ৪৬ দিন বাংলা করোনামুক্ত রয়েছে। বিশ্বের প্রেক্ষিতে ধরলে আড়াই মাসের বেশি সময় করোনামুক্ত রয়েছে বাংলা। হ্যাঁ করোনা নিয়ে কয়েক কোটি বঙ্গবাসীর মধ্যে দিন দিন উদ্বেগ বাড়লেও, সোমবার রাত পর্যন্ত এটুকুই স্বস্তি, এখনও পর্যন্ত বাংলার কোনও বাসিন্দা বা বাংলায় আসা কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি।
যেখানে পশ্চিম, মধ্য ও দক্ষিণ ভারতে এবং এদিনই ওড়িশাও তাতে যুক্ত হওয়ায় দেশের ১৫টি রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সারা পৃথিবীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পৌনে দুই লক্ষ। মৃত সাড়ে ছয় হাজারের বেশি। বিশ্ব মানচিত্রের অর্ধেকের বেশি করোনায় গ্রাসে। ১৫৭টি দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ছাড় পায়নি তো বটেই বরং ভয়াবহ অবস্থা চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে শীর্ষ পর্যায়ে থাকা দেশগুলিরও।
করোনা নিয়ে বিশ্বজোড়া উদ্বেগ এমন ভীষণ পর্যায়ে চলে যাওয়ার অনেক আগে থেকেই প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে সীমান্তবর্তী সমস্ত এলাকায় ব্যাপক নজরদারি সহ একাধিক সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্যই এখনও ‘নো করোনা’ স্ট্যাটাস ধরে রাখতে পেরেছে বাংলা— এমনই মনে করছে বিভিন্ন মহল। যে কোনও দিন করোনা রোগীর সন্ধান মিলতে পারে, এই আশঙ্কায় চাপা টেনশন থাকলেও, সোমবার পর্যন্ত ৪৬ দিন রাজ্য করোনামুক্ত থাকায় দৃশ্যত কিছুটা সন্তুষ্ট রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী।
সোমবার তিনি বলেন, স্থল, জল, বিমানবন্দরের মাধ্যমে লাগাতার নজরদারি, সীমান্তবর্তী ৭৮টি এলাকায় চেকিং সহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট কাজে এসেছে। প্রধান কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রীর। আমাদের যাবতীয় পদক্ষেপকে উনি উৎসাহ ও সমর্থন জুগিয়ে গিয়েছেন। তবে বিন্দুমাত্র আত্মসন্তুষ্ট নই। যে কোনও সময় যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য লাখেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী-চিকিৎসক প্রস্তুত আছেন।
করোনা মোকাবিলায় বাংলার পদক্ষেপে অত্যন্ত সন্তুষ্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-ও। সংস্থার বাংলার কো-অর্ডিনেটর ডাঃ প্রীতম রায় বলেন, রাজ্য থেকে শুরু করে জেলাস্তর পর্যন্ত আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন, রোগ পরীক্ষা সহ একাধিক বিষয়ে যেভাবে আমাদের ও কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন মেনে চলছে বাংলা, তাতে প্রশংসা প্রাপ্য।
আর কিছুদিন আগে করোনা মোকাবিলায় বাংলার পদক্ষেপের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকারই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদান মুর্শিদাবাদের করোনা সন্দেহে ভর্তি এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককে নিখুঁতভাবে চিহ্নিত করে (কনট্যাক্ট ট্রেসিং) ব্যবস্থা নেওয়ায় ‘প্রাউড অব ইউ’ বলে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা দেন রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ আমলাকে।