‘মৃত্যদূত’ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে গোটা বিশ্বের সর্বত্রই ধর্মস্থানগুলিতে জমায়েত নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রোমের ভ্যাটিকান সিটিতে ইস্টার উপলক্ষে এক সপ্তাহ ধরে যে উৎসব চলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মক্কা-মদিনা-জেরুজালেমেও বন্ধ হয়েছে জমায়েত। দেশের বহু মন্দিরের দরজাও এখন বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে বনগাঁয় বিজেপির একাংশ চাইছে জমায়েত এড়াতে এ বছর ঠাকুরনগরে মতুয়া মেলা বন্ধ থাক। আর এ নিয়েই প্রকাশ্যে এসে গেল গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল। মেলা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে বনগাঁর সাংসদকে স্মারক লিপি দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের মারে আহত হলেন ৫ বিজেপি নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে বনগাঁর বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীদের বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্কতার জন্য বারুণী মেলা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে রবিবার ঠাকুরনগর স্টেশনের কাছে মাইক লাগিয়ে প্রচার করেন স্থানীয় বিজেপি নেতাকর্মীরা। ঠাকুরনগরে মতুয়াদের বারুণী মেলা বন্ধ করার ব্যাপারে তাঁরা গণসই সংগ্রহ করেন। মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে সোমবার তাঁরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে স্মারকলিপি জমা দেন। সোমবার রাতে জনাপাঁচেক বিজেপি নেতা-কর্মী যান বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ঠাকুরনগরের মতুয়া মহাসঙ্ঘের নেত্রী মমতাবালা ঠাকুরের কাছে। তাঁর কাছে নির্বিঘ্নেই স্মারকলিপি জমা দেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তবে বিপত্তি ঘটে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে।
সুটিয়া অঞ্চলের বিজেপি নেতা বাবলু দাসের অভিযোগ, তাঁরা বনগাঁর সাংসদের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে তিনি তো তা নেনইনি, বরং তাঁর কাছ থেকে বেরিয়ে এসে ওই বিজেপি নেতাকর্মীরা গাড়িতে উঠতেই শান্তনু ঠাকুরের লোকজন এসে বেধড়ক মারধর করে তাঁদের। যে গাড়িতে তাঁরা এসেছিলেন সেই গাড়ির সব কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় মোট ৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মলয় মণ্ডল নামে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁর কানে সেলাই পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রকাশ্যে এসে পড়েছে বনগাঁ বিজেপির অন্তর্কলহ৷ এভাবে এক গোষ্ঠীর ওপর অন্য গোষ্ঠীর চড়াও হওয়া যে পুরভোটের ঠিক আগে আগে রাজ্য বিজেপির কাছে বেশ খারাপ ইঙ্গিত তা বলাই বাহুল্য।