স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। দেশের বৃহত্তম সরকারি মালিকাধীন ব্যাঙ্কটিকে ‘হৃদয়হীন’ এবং ‘অকর্মণ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। যদিও অর্থমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে মনক্ষুণ্ণ হয়েছেন ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা।
একটি অডিও ক্লিপ শুক্রবার ইউটিউবে আপলোড হয়েছে, শনিবার সেটি আরও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে শোনা যাচ্ছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান রজনীশ কুমারকে রীতিমতো ধমক দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। দেশের সব থেকে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রধানকে তিনি পষ্টাপষ্টি বলছেন, ‘আপনারা হলেন একটা হার্টলেস ব্যাঙ্ক।’ ওই অডিও ক্লিপে এসবিআইয়ের অফিসারদের অকর্মণ্য বলতেও শোনা যায় নির্মলাকে। যদিও ‘এখন খবর’ ওই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি। তবে এ ঘটনা দিল্লীর ক্ষমতার অলিন্দে ইতিমধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে ইয়েস ব্যাঙ্কের সঙ্কটের পর সরকার যখন এসবিআইয়ের শরণাপন্ন হয়েছে, তখনই এ ঘটনা ঘটায় হইচইও বেশি হচ্ছে।
এখন কৌতূহলের বিষয় হল, কেন মেজাজ হারিয়েছিলেন নির্মলা? ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে আসাম ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সমস্যা নিয়ে ব্যাঙ্কারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং রাজ্যের অর্থ দফতরের অন্য অফিসাররাও সেখানে ছিলেন। সেখানেই আলোচনায় জানা যায় যে আসামের আড়াই লক্ষ চা শ্রমিকের অ্যাকাউন্ট অপারেশনালাইজ হয়নি। কারণ তাদের কেওয়াইসি ডকুমেন্ট বকেয়া রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা সরকারি প্রকল্পের টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাচ্ছেন না। এ কথা শুনেই নির্মলা রেগে গিয়ে বলেন, ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া সব থেকে বড় ব্যাঙ্ক হলে কি হবে…. আপনারা হার্টলেস ব্যাঙ্ক।’ এসবিআই চেয়ারম্যানকে নির্মলা আরও বলেন, ‘ব্যাঙ্কের উচিত ছিল এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রকের ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস বিভাগের সঙ্গে কথা বলা। যাতে তারা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে এ বিষয়ে বিহিত ব্যবস্থার জন্য আবেদন জানাতে পারে।’
এখানেই থেমে থাকেননি অর্থমন্ত্রী। স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানকে তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের অকর্মণ্যতার জন্যই এমনটা হয়েছে। কাজে মন নেই আপনাদের। এ জন্য আমি আপনাকেই দায়ী করছি।’ অডিও ক্লিপে শোনা যায় এসবিআই চেয়ারম্যান এ জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘আমি সত্যিই দুঃখিত ম্যাডাম।’ এ ব্যাপারে অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এবং এসবিআই চেয়ারম্যান।