সিন্ধিয়া পরিবারের অঢেল সম্পত্তি। এর মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চলছে ৩৫ বছর ধরে। দিল্লীর অলিন্দে গুঞ্জন, বিজেপিতে আসার অন্যতম কারণ নাকি এই সম্পত্তি বিবাদ মেটানো। কারণ, জ্যোতিরাদিত্যের সঙ্গে এই বিবাদ তাঁর পিসি বসুন্ধরা রাজে, যশোধরা সিন্ধিয়াদের। জ্যোতিরাদিত্যের বক্তব্য, চার পিসি আগে কথা দিয়েছিলেন, অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে আর স্থাবর সম্পত্তির ভাগ চাইবেন না। দামি অলঙ্কার, বাসন-পত্র নেওয়ার পরে এ বার সম্পত্তির ভাগ চাইছেন তাঁরা। ঘটনাচক্রে দুই পিসিই বিজেপি নেত্রী। যদিও তাঁদের সঙ্গে অমিত শাহের সম্পর্ক ভাল নয়। বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন, ‘‘পিসিদের চাপ দিয়ে মহারাজ কি এ বারে বিবাদ মেটাতে চান?’’
নতুন দলে যোগ দিয়েই নিজের জায়গা পাকা করার খেলায় নেমে পড়েছেন সিন্ধিয়া। বিজেপি নেতা শিবরাজ সিংয়ের বাড়িতে সাদামাঠা একটি কাঠের টেবিলে একসঙ্গে নৈশভোজ শিবরাজ ও মধ্যপ্রদেশের বিজেপির বড় নেতারা। ছিলেন সিন্ধিয়াও। এ ছিল গত কাল রাতে শিবরাজের বাড়ির ছবি। আর কাল সকালে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে রাজ্যসভার মনোনয়ন পেশ করে সিন্ধিয়া মধ্যাহ্নভোজে গেলেন রাজ্যে বিজেপির আর এক মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদার নরোত্তম মিশ্রের বাড়ি। সেখানে তো আরও নিচু চেয়ারে বসে খাওয়া-দাওয়া হল। টিভির পর্দায় সে দৃশ্য দেখে দিল্লীতে কংগ্রেসের এক নেতা স্মরণ করলেন, ‘‘এক বার বাড়িতে ডেকেছিলাম সিন্ধিয়াকে। নিজের হাতে রেঁধে খাওয়াব তাঁকে। বলে বসল, রূপোর বাসন ছাড়া খাই না। এখন দেখে ভাল লাগছে, বিজেপিতে গিয়ে প্রায় হাঁটু মুড়ে খেতে বসেছেন। না হোক অসত্যই, তবুও বলছে গাড়িতে এসি চালান না!’’
রাহুল গান্ধী গত কাল বলেছিলেন, ‘‘সিন্ধিয়া দল ছেড়েছেন, কারণ রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ভয় পেয়ে গিয়েছেন।’’ কীসের ভয়? গোয়ালিয়র রাজ পরিবারে সোনার চামচ মুখে জন্ম সিন্ধিয়ার। গোয়ালিয়রের শেষ মহারাজা জিবাজিরাও সিন্ধিয়ার নাতি জ্যোতিরাদিত্য। জিবাজিরাও মারা গিয়েছেন মাত্র ৪৫ বছর বয়সে। জ্যোতিরাদিত্যের বাবা মাধবরাওয়ের মৃত্যু হয়েছে ৫৬ বছর বয়সে। ক’দিন আগেই ঘরোয়া মহলে সিন্ধিয়া বলেছেন, ‘‘আমার পরিবারে পুরুষরা কেউ ষাট পেরোন না। সামনের বছর আমার ৫০। দ্রুত গোছাতে হবে!’’ তাই রাজনৈতিক মহলে বারেবারে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি শুধু নিজের আখের গোছাতেই বিজেপিতে যোগদান সিন্ধিয়ার?