চীন, ইতালি, ইরানের মতো দেশগুলির পাশাপাশি করোনা আতঙ্কে কাঁপছে মার্কিন মুলুকও। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে এবার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যুর হয়েছে। এরপরই আরও তত্পর হয়ে ওঠে হোয়াইট হাউজ। শুক্রবার দেশের মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে, তড়িঘড়ি দেশজুড়ে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। পরিস্থিতির মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা-ও ঘোষণা করেছেন তিনি।
এক সংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আমেরিকার জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত। এখনও পর্যন্ত মার্কিন মুলুকে মারণ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ২,৩২৯ জন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮২ জন। সংক্রমণের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এরপরই দেশের জন্য দুটি বড় ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় আমেরিকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি। এবং এর পাশাপাশি ৫০ বিলিয়ন ডলারের জরুরি ত্রাণ তহবিল তৈরির কথাও ঘোষণা করেন।
সাংবাদিক বৈঠকে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় সহযোগিতার জন্য ৫ হাজার কোটি ডলারের বিশাল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দের কথা ঘোষণা করে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই অর্থ মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে। শুধু তাই নয়। চিকিৎসার জন্য নিজের ৩ মাসের বেতন দান করার কথা ঘোষণা করেন তিনি। ২০১৯-এর শেষ তিন মাসের বেতন মার্কিন স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব স্টিফানি গ্রিশ্যাম মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া চেকের ছবি টুইট করে এই তথ্য জানান।
এরপর, শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেশজুড়ে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করলেন। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৮টি সপ্তাহ আমেরিকার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ভেবেচিন্তে প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের প্রতিটি হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অনুরোধও করেছেন সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। পাশাপাশি তিনি এ-ও ঘোষণা করেছেন, চিকিৎসার জন্য আমেরিকার বিভিন্ন প্রাদেশিক সরকার ও অঞ্চলগুলি আপৎকালীন ত্রাণ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত দেবে মার্কিন প্রশাসন।
এছাড়া করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন ট্রাম্প রবিবার যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় প্রার্থনা দিবস পালনের কতজাও ঘোষণা করেছেন।শনিবার এক টুইটে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি সসম্মানে রোববার, ১৫ মার্চকে জাতীয় প্রার্থনা দিবস ঘোষণা করছি। ইতিহাস অনুসারে আমরা এমন এক দেশ, যারা এমন পরিস্থিতিতে সুরক্ষা ও শক্তির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে যাই।’ এরপরেই আরেক টুইটে তিনি বলেন, ‘যে যেখানেই থাকেন, সবাই বিশ্বাস করে প্রার্থনায় অংশ নিন। একজোট হলে আমরা সহজেই জয়ী হবো!’
