দু’দিন আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পর অভিমানের কথা জানিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, ‘তৃণমূলের তরফ থেকে তো শোভনদাকে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না।’ এরমধ্যে বুধবার আবার বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, শোভনই বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলেই অন্যদিকে মোড় নিল আলোচনা। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন বৈশাখী। যা নিয়ে নয়া জল্পনা শুরু হল রাজনৈতিক মহলে।
এদিন বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ নবান্নে যান মিল্লি আল আমিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা । তারপর সোজা চলে যান ১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বৈশাখী।
শোভনের নিষ্ক্রিয়তা কাটাতে কম চেষ্টা করেনি তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু তাও রাজনীতিতে ফেরানো যায়নি প্রাক্তন মেয়রকে। গত মঙ্গলবার পার্থবাবু বলেছিলেন, ‘আমি অনেক চেষ্টা করেছি শোভনকে সক্রিয় করার। আমি জানি না আর কী করলে শোভন ফিরবেন!’ গতবছর ভাইফোঁটার দিন আচমকা মমতার কালীঘাটের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন শোভন। সঙ্গে ছিলেন বান্ধবী বৈশাখীও। তার আগেই আগস্ট মাসে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের কানন। ভাইফোঁটার দিন মমতার বাড়িতে শোভনকে দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন, এবার বোধহয় তৃণমূলে ফিরবেন বেহালা পূর্বের বিধায়ক। কিন্তু তা হয়নি।
এর মধ্যেই আবার শোভনের বিধানসভায় দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে। যদিও এনিয়ে তাঁদের ক্ষোভের কথা গোপন করেননি শোভন-বৈশাখী। আগের দিন বৈশাখীদেবী বলেছিলেন, ‘রত্না থাকলে শোভনদার পক্ষে রাজনীতি করা মুশকিল। এটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’ কিন্তু বৃহস্পতিবার বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আচমকা নবান্নে হাজির হওয়ায় জল্পনা অন্য দিকে মোড় নিতে শুরু করেছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, পুরভোটে যাতে শোভন অন্তত বিজেপিতে সক্রিয় না হন তার জন্য ময়দানে নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ, ফিরহাদ হাকিমদের দিয়ে সেই কাজ না হওয়াতে মমতা নিজেই হস্তক্ষেপ করলেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে।