ধর্মশালায় ক্রিকেট মানেই সুন্দর, মনোরম পরিবেশে বাইশ গজের লড়াই। কিন্তু ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ শুরুর আগে ছবিটাই বদলে গিয়েছে। সুন্দর ধর্মশালায় এখন আতঙ্কের আঁচ। যে আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এই করোনা-আতঙ্কের মধ্যেই, আজ, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ান ডে দ্বৈরথ।
এবার ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে খেলা হলেও তার তাৎপর্য আলাদা। কারণ অনেকগুলো। এক, সামনের অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। দীর্ঘদিন পর ওয়ান ডে টিমে ফিরেছেন হার্দিক পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার ও শিখর ধাওয়ান। মাঝে হার্দিক যখন চোটের জন্য বাইরে ছিলেন, শিবম দুবেকে বেশ কিছু ম্যাচে সুযোগ দিয়েছিল ভারত। কিন্তু দুবে সেই সুযোগের পুরো সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। ফলে ফের হার্দিকে ফিরেছে ভারত। ডিওয়াই পাটিল কর্পোরেট কাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন হার্দিক। তাঁকে ফিট ও চনমনে দেখিয়েছে।
আজ নজর থাকবে অধিনায়ক বিরাট কোহলির দিকে। যিনি নিউজিল্যান্ডে তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে করেছিলেন মাত্র ৭৫ রান। এখন বিরাটের সামনে এই সিরিজ ফর্ম ফিরে পাওয়ার দরজা। তিন ম্যাচের এই সিরিজের পরেই আইপিএল। তার আগে এটাকে প্রস্তুতি সিরিজও বলা যেতে পারে। এই সিরিজে মিডল অর্ডারে খেলার কথা শ্রেয়স আয়ার ও লোকেশ রাহুলের। বিরাট তিনে গেলে চার ও পাঁচে যাবেন এই দু’জন। সাদা বলের ক্রিকেটে এখন রাহুলকে মিডল অর্ডারেই ভাবছে ভারত।
পেসারদের মধ্যে ভুবনেশ্বর কুমারের ফিরে আসা টিম ইন্ডিয়ার বড় প্রাপ্তি। দীর্ঘদিন পরে চোট সারিয়ে ফিরছেন ভুবনেশ্বর। ভারতের তিন পেসার হতে পারেন বুমরা-ভুবনেশ্বর ও নভদীপ সাইনি। ভুবনেশ্বর টিমে ঢুকবেন শার্দুল ঠাকুরের জায়গায়। যখনই ভারত সাদা বলের ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভুবি-বুমরাকে এক সঙ্গে খেলিয়েছে, দারুণ ভাবে সফল হয়েছে। দু’জনে মিলে এক সঙ্গে খেলেছেন ৪১ টি ম্যাচ। জেতা-হারার পরিসংখ্যান ৩১-১০।
আজ প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচের আগে দুই শিবিরেই সতর্কতার ছায়া। ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা— দু’দেশের বোর্ডের তরফেই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ক্রিকেটারদের কাছে। পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসকদের তৈরি করা নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে ক্রিকেটারদের। যে কারণেই হয়তো এই সিরিজে দেখা যাবে না ক্রিকেট মাঠের অতিপরিচিত একটি দৃশ্য। থুতু দিয়ে বল পালিশ করা। কিন্তু কেন? মনে করা হচ্ছে থুতু দিয়ে বল পালিশ করার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে এ কথাই জানিয়ে দিয়ে গেলেন ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেই।
আফ্রিকা শিবিরেও নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেমন, ক্রিকেটাররা হয়তো করমর্দন করার রাস্তায় হাঁটবেন না। পাশাপাশি ভক্তদের সঙ্গে মেলামেশা বা নিজস্বী কি ছবি তোলার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড।