হোলির পরদিনই যে সংসদে দিল্লী দাঙ্গার প্রসঙ্গ উঠবে, তা গত সপ্তাহেই ঠিক ছিল। তবে প্রাক্তন সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দলত্যাগ ও বিজেপিতে যোগদানের ধাক্কা কাটিয়ে কতটা আগ্রাসী হবে কংগ্রেস, তা নিয়ে গতকাল থেকে জল্পনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। তবে বুধবার লোকসভার অধিবেশনে দিল্লীর হিংসা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ করেন কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। এই ইস্যুতে তাঁকে সমর্থন করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়ও। যার জবাব দিতে গিয়ে পাল্টা কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের নিশানা করেন বিজেপির মীনাক্ষি লেখি। এদিকে, বিকেলে দিল্লী বিতর্কে সংসদে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
অধীর আরও বলেন যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপর প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের (পিএমও) ভরসা নেই বলেই দিল্লী হিংসার ঘটনার পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে পাঠানো হয়েছিল এলাকা পরিদর্শনে। তাঁর কথায়, ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়কে রিপোর্ট করেন বলেই অজিত ডোভালকে পাঠানো হয়েছিল দিল্লির হিংসাকবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শনে।’
দিল্লীর সাম্প্রতিক সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা কম করে প্রায় ৩০০। হিংসার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লী পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রসঙ্গ তুলেই আজ শুরুতেই অমিত শাহকে নিশানা করেন অধীর চৌধুরী। বলেন, ‘দিল্লীতে মানবাধিকার পরাজিত হয়েছে। ভারত সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এই নিয়ে জবাব দিতে হবে। তিন দিন ধরে হিংসা কীভাবে চলল? দিল্লী যখন জ্বলছিল, অমিত শাহ কী করছিলেন?’ অধীরের প্রশ্নের পরই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়। তবে বিরোধীদের বক্তব্যের অধিকার নিয়ে স্পিকারকে আর্জি জানান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। রাজ্যসভাতেও দিল্লী হিংসা নিয়ে সোচ্চার হন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
অধীর চৌধুরীর বক্তব্যের জবাবে বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষি লেখি বলেন, ‘কিছু মানুষের আগুন জ্বালানোর ইতিহাস রয়েছে। এ দেশে কবে কখন হিংসা হয়েছে, এবং তার জন্য কে কে দায়ী ছিল- তার তথ্য রয়েছে আমার কাছে।’ তাঁর আরও দাবি, ‘৩৬ ঘণ্টার মধ্যে দিল্লী হিংসা নিয়ন্ত্রণ করেছিল বিজেপি।’ তবে আজ হোলির পরদিন সংসদ চালু হতেই রীতিমত যেভাবে যুদ্ধ যুদ্ধ রব লেগে গেল, তা বলাই বাহুল্য।