সোমবার রাত থেকেই তৈরি হচ্ছিল জল্পনা৷ অবশেষে মঙ্গলবার বেলা গড়াতেই সব পরিষ্কার হয়ে গেল৷ এদিন হোলির উত্সবের মধ্যেই জ্যোতিরাদিত্যকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ এরপর তিনজনের বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন৷ তবে তার আগেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন জ্যোতিরাদিত্য৷ বুধবার এ নিয়েই তাঁকে তীব্র শ্লেষাত্মক আক্রমণ করলেন মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ।
সিন্ধিয়া ‘অমিত শাহ বা নির্মলা সীতারামনকে টপকে যেতে পারেন’ বলে খোঁচা দিয়েছেন দিগ্বিজয়। একই সঙ্গে তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘মোদী-শাহের অভিভাবকত্বে’ ভাল থাকুন। অন্য দিকে সিন্ধিয়া ১৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কংগ্রেস থেকে কী কী পেয়েছেন, তা নিয়ে আলাদা করে টুইটও করেছে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে জ্যোতিরাদিত্য যখন সোনিয়া গান্ধীকে ইস্তফাপত্র দিয়েছিলেন, তখনই কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ পাকা হয়েছিল। আবার তাঁর বিজেপিতে যোগদানও ছিল কার্যত সময়ের অপেক্ষা। একই সঙ্গে মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের সরকারও তীব্র সঙ্কটের মুখে পড়ে যায়। কারণ প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকায় সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে তাও দিগ্বিজয় সিংহ এবং মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ দু’জনেই মঙ্গলবার বলেছিলেন, সিন্ধিয়া দল ছাড়লেও সরকার টিকিয়ে রাখতে কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু রাত পোহাতেই জ্যোতিরাদিত্যকে আক্রমণ শুরু করে দিল কংগ্রেস।
এদিন সকাল সাড়ে ছ’টায় পর পর টুইট করে সিন্ধিয়াকে কটাক্ষে বিঁধেছেন দিগ্বিজয়। তিনি লিখেছেন, ‘যখন দেশে একের পর এক ব্যাঙ্ক ধসে পড়ছে, টাকার দাম তলানিতে চলে যাচ্ছে, অর্থনীতি কাঁপছে এবং আমাদের সামাজিক বুনন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তখন উনি (সিন্ধিয়া) মোদী-শাহ সরকারে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন।’ এরপরেই কার্যত ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে গিয়ে দিগ্বিজয়ের অন্য টুইট, ‘উনি অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামনের পরিবর্ত হয়ে উঠতে পারেন। ওঁর প্রতিভার বিচার করলে ওঁদের (অমিত শাহ-নির্মলা সীতারামন) চেয়েও ভাল কাজ করতে পারবেন। মোদী-শাহের অভিভাবকত্বে উনি বেড়ে উঠুন। মহারাজ, আমাদের শুভেচ্ছা রইল।’
এখানেই শেষ নয়। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের তরফে আবার পরোক্ষে ‘বিশ্বাসঘাতক’ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা হয়েছে সিন্ধিয়াকে। কংগ্রেসে থেকে কী কী পেয়েছেন, বা কংগ্রেস তাঁকে কী কী দিয়েছে, সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সিন্ধিয়ার ১৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ১৭ বছর সাংসদ, দু’বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্য সচেতক, কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক, উত্তরপ্রদেশে দলের দায়িত্ব, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, ভোটপ্রচারের প্রধান, ৫০টিরও বেশি টিকিট, ৯ জন মন্ত্রী।’ সরাসরি কিছু না বলা হলেও শেষে শুধু প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘এর পরেও মোদী-শাহের আশ্রয়ে?’