সোমবার রাত থেকেই তৈরি হচ্ছিল জল্পনা৷ অবশেষে মঙ্গলবার বেলা গড়াতেই সব পরিষ্কার হয়ে গেল৷ এদিন হোলির উত্সবের মধ্যেই জ্যোতিরাদিত্যকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ এরপর তিনজনের বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন৷ তবে তার আগেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন জ্যোতিরাদিত্য৷ আর তাঁর কংগ্রেস ত্যাগের পর পরই মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা থেকে ইস্তফা দেন ৬ মন্ত্রী-সহ ১৯ বিধায়ক। যার ফলে অস্বস্তি বেড়েছে কমলনাথ সরকারের। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে পদত্যাগী মন্ত্রীদের মন্ত্রীত্ব পদ থেকে সরানোর সুপারিশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে দল বিরোধী কাজের অপরাধে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে অবিলম্বে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছেন। এমনটাই জানিছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল। তবে এর আগেই অন্তর্বতীকালীন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন জ্যোতিরাদিত্য। সেখানেই তিনি লিখেছেন, ‘১৮ বছর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করার পর এখন সম্পর্ক ছিন্ন করার সময় হয়েছে। মানুষের যে কাজ করতে চেয়েছি তা এই দলে থেকে করা যাচ্ছিল না।’ সূত্রের খবর, এবার পদ্মপ্রতীকে রাজ্যসভার টিকিট চূড়ান্ত হলেই বিজেপিতে যোগ দেবেন প্রয়াত মাধবরাও সিন্ধিয়ার পুত্র।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘন্টায় মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে মহানাটক ঘটে চলেছে। হাত শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে আসতেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার অনুগামী ৬ মন্ত্রী-সহ ১৭ জন বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সূত্রের খবর, এইসব মন্ত্রী, বিধায়কদের বিজেপি শাসিত রাজ্য কর্ণাটকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্ণাটক পুলিশও জানিয়েছে যে, সে রাজ্যেই রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও বিধায়ক। এই পরিস্থিতিতে বেকায়দায় মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকার। যদিও, পোড় খাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তথা মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথও কৌশলে তাঁর চাল চেলেছেন। মধ্যপ্রদেশের ২০ মন্ত্রী সোমবার রাতেই ইস্তফা দিয়েছেন। নতুন করে মন্ত্রীসভা গঠন করে বাজিমাতের চেষ্টায় কমলনাথ।
সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে সোমবারই দিল্লীতে দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। রাতেই তড়িঘড়ি ফেরেন ভোপালে। রাতেই মন্ত্রীসভার বাকি সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মন্ত্রীরা একে একে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইস্তফাপত্র পেশ করেন। বৈঠকে মন্ত্রীসভা পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়। এই পরিস্থিতির জন্য প্রকাশ্যে কমলনাথ বিজেপির ক্ষমতা দখলের রাজনীতিকে দায়ী করেন। রাতে বিবৃতি দিয়ে জানান, ‘মাফিয়াদের সহযোগিতায় বিজেপি সরকারে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে। ওদের সফল হতে দেব না। এই সরকার পাঁচ বছরই চলবে।’