একদিকে যখন কর্মীসভায় যোগ দিতে আসা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই আদিবাসী লোকশিল্পীদের নয়া হারমোনিয়াম তুলে দিয়েছেন জেলাশাসক। তখন অন্যদিকে, ৪৮ ঘন্টা কেটে গেলেও ঘোর কাটেনি হোপনময় হাঁসদার। ২ ছেলে ও ১ মেয়ের মা হোপনময়ের এখনও মনে হচ্ছে তাঁর হাত ধরে রয়েছেন বাংলার অগ্নিকন্যা। তাই মুখ ফুটে জনে জনে এখন একটাই কথা বলছেন হোপনময়- ‘ঈশ্বরকে ছুঁতে পেরেছি, তাই জীবন আমার সার্থক।’ এখন ঈশ্বরের কাছে তাঁর একটাই প্রার্থনা, ‘দিদি যেন ছেলেটারে একডা চাকরির ব্যাওস্থা কইরা দেন।’ দিদিও তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁর ছেলেরও চাকরি হবে। সব দিক থেকেই হোপনময় হাঁসদা এখন মালদা জেলার মানুষের কাছে রীতিমত সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছেন। কারণ গত বৃহস্পতিবার মালদা জেলার গাজোলে জেলা পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত আদিবাসীদের গণবিবাহের আসরে এই হোপনময় হাঁসদার হাত ধরেই মাদলের তালে তালে আদিবাসী নৃত্যে পা মেলান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার গণবিবাহের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা করার জন্য আদিবাসী মহিলা নাচের দল হাজির ছিল। ওই নাচের দলে ছিলেন হোপনময়ও। সেইদিন নাচের পরই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় হোপনময়ের। সেই সময় উপহার পাওয়া শাড়ি, যা গায়ে দিয়ে নাচে পা মিলিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই শাড়িটিও হোপনময়ের হাতে তুলে দেন তৃণমূলনেত্রী। সেই শাড়ি এখন হোপনময়ের কাছে কার্যত কোটি টাকার সম্মান। এখন সবাই এসে হোপনময়কে জিজ্ঞাসা করে চলেছে, কী কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে? তার উত্তরে হোপনময় জানিয়েছেন, ‘নিজের জন্য কিছু চাইনি। চেয়েছি শুধু ছেলেটার একডা চাকরি। দিদিকে বললাম, আপনি অনেকের জন্য অনেক কিছু করে দিয়েছেন। আমার ছেলেটার যদি শুধু একডা চাকরি কইরে দেন তো ভালো হয়। যে কোনও চাকরি, পুলিশে হলেও চলবে। দিদি বলেছে, হবে হবে। সবার চাকরি হচ্ছে, তোমার ছেলেরও হবে। ধৈর্য ধরো।’