চলতি বছর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রদর্শন করেই ভারতের ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করেছিলেন আমেরিকা প্রবাসী ভারতীয়রা। সেদিন নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, স্যান ফ্র্যান্সিসকো, ওয়াশিংটন ডিসি-সহ আমেরিকার ৩০টি শহরে অনাবাসী ভারতীয়রা সিএএ-বিরোধী মিছিলের আয়োজন করেছিলেন। আর এবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর মাধ্যমে প্রবাসী ভারতীয়দের মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ করছে মোদী সরকার, এই অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়রা৷ তাঁদের প্রত্যেকেরই ‘ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া’ (ওসিআই) কার্ড রয়েছে।
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে এই মামলা গ্রহণ করেছেন এবং কেন্দ্রকে নোটিস পাঠিয়ে অভিমত জানতে চেয়েছেন৷ তিনি জানিয়েছেন, সিএএ-কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা প্রবাসী ভারতীয়দের এই মামলাটিকে সিএএ সংক্রান্ত অন্যান্য মামলার সঙ্গেই যুক্ত করা হবে, একইসঙ্গে হবে তার পরবর্তী শুনানি৷ ব্রিটেনের ‘ইন্ডিয়ান মুসলিম ফেডারেশন’ এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অফ ডেমোক্র্যাটিক ইন্ডিয়ান্স অ্যাব্রোড’ নামক দুটি সেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে এই মামলাগুলি করেছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী কয়েকশো ভারতীয়। প্রবাসী ভারতীয়দের সংগঠনের তরফে লড়ছেন আইনজীবী রাজা চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর সহযোগী আদিল আহমেদ৷
প্রসঙ্গত, শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলে তাঁদের সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ম অনুযায়ী শাস্তি পেতে হয়৷ এমনকী সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার তাঁদের সেদেশে থাকার অনুমতিও বাতিল করতে পারে৷ এখন কেন্দ্রীয় সরকার যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তৈরি করেছে, সেখানে বলা হয়েছে প্রবাসে বিভিন্ন দেশে থাকা ওসিআই কার্ডধারী ভারতীয়দের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন কারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে ভারত সরকার৷ প্রয়োজনে তাদের ওসিআই কার্ড বাতিলও করতে পারবে সরকার৷ কিন্তু কোন কোন কারণে এই কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, সে বিষয়ে কোনও তথ্য জানায়নি কেন্দ্র। সিএএ-তেও এই বিষয়ে কোনও তথ্য উল্লেখ করা নেই৷
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের মৌলিক অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে৷ সংবিধানের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী এই অধিকারগুলি সুরক্ষিত৷ এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনের ধারাতেও সুরক্ষিত প্রবাসী ভারতীয়দের মৌলিক অধিকার৷ ‘যে ব্যক্তি ভারতেই থাকেন না, ওসিআই কার্ড নিয়ে থাকেন বিদেশের বুকে, তাঁর বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে ভারত সরকার?’ শীর্ষ আদালতে দায়ের করা মামলায় এই প্রশ্নই তুলেছেন মামলাকারী প্রবাসী ভারতীয়রা৷