আইনের নাম ‘বিবাদ সে বিশ্বাস’! অতীতে কেন্দ্রীয় আইনের এমন হিন্দি নামকরণ হয়েছে কি না বিশেষজ্ঞরা মনে করতে পারছেন না। লোকসভায় তুমুল বিবাদকে সাক্ষী রেখেই ধ্বনিভোটে পাশ হল বিলটি। প্রস্তাবিত আইনের হিন্দি নামকরণ নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি তুললেও সরকারপক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছে তা ধোপে টেকেনি। প্রবল হট্টগোলের মধ্যেও সভাপতির চেয়ারে বসে বিল পাশ করিয়েছেন মীনাক্ষী লেখি।
প্রত্যক্ষ কর আদায় সংক্রান্ত মামলাকে কেন্দ্র করে আইনি জটিলতায় সমস্যায় কেন্দ্রীয় সরকার৷ সারা দেশে এমন মামলার সংখ্যা প্রায় ৪,৮৩,০০০৷ এই সব মামলার জেরে কর বাবদ প্রাপ্য টাকা আদায় করতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার৷ এব পাশাপাশি মামলা সংক্রান্ত খরচও চালাতে হচ্ছে সরকারকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সাধারণ বাজেটে একটি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেন৷ প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় ‘বিবাদ সে বিশ্বাস’৷
এই প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকার সেই সব ব্যক্তিদের নতুন একটি সুযোগ দিচ্ছে বকেয়া কর মিটিয়ে দেওয়ার জন্য। এই প্রকল্পে বিনা জরিমানায় এবং বিনা সুদে করদাতারা তাদের বকেয়া কর মেটানোর সুযোগ পাবেন৷ ৩১ মার্চের মধ্যে তাঁরা নিজেদের বকেয়া কর দিয়ে দিলে সরকার কোনওপ্রকার জরিমানা করবে না।
কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরি বলেছেন, ‘যেভাবে বিবাদের মধ্যেই বিল পাশ করানো হল, তা নজির হয়ে রইল। প্রত্যক্ষ কর আদায়ে সরকার ন্যক্কারজনকভাবে টাকার বিনিময়ে রফা করার পথ ধরল। যাবতীয় আইনি বন্দোবস্ত তুলে দিয়ে এই বিলে কর আইন ভঙ্গকারীদের টাকার বিনিময়ে মামলা মিটিয়ে নেওয়ার পথ খুলে দিল।’
এদিকে, রাজ্যসভার দলনেতা থাওয়ার চাঁদ গেহলট দিল্লী নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়ে যান। পরক্ষণেই অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা তাঁকে সংশোধন করে জানান, আলোচনার ব্যাপারে চেয়ারম্যান যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তা–ই হবে। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের অভিযোগ, দিল্লীর হিংসা বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে আলোচনা করতে আপত্তি থাকলেও তৃণমূল, কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির পক্ষ থেকে রাজ্যসভা পরিচালনার ২৬৭ নং রুল অনুযায়ী নোটিস দেওয়া হয়েছিল। যাতে সভার অন্যান্য কাজ মুলতুবি রেখে ‘দিল্লীতে মৃত্যু ও পুনর্বাসন’ বিষয়ে আলোচনার আর্জি জানানো হয়েছিল। প্রধান ৩টি দলের সেই দাবি মানা হয়নি। এমনকী নোটিস ও বিষয়ের কথা উল্লেখ পর্যন্ত করেননি ডেপুটি চেয়ারম্যান। ডেরেকের কটাক্ষ, ‘সংসদ এখন গুজরাটের জিমখানায় পরিণত হয়েছে। মনে হচ্ছে গণতন্ত্রের পীঠস্থানকে বিজেপি–র ব্যাক অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’