বিরতির পর প্রায় ৪০ মিনিট দশজনের গোকুলমের বিরুদ্ধে খেলেও তার ফায়দা তুলতে পারল না ইস্ট বেঙ্গল। মঙ্গলবার আই লিগের অ্যাওয়ে ম্যাচে গোকুলম কেরালা এফসি’র বিরুদ্ধে ১-১ গোলে ড্র করলেন কোলাডোরা। জোসেফ গোল করে শুরুতে দক্ষিণের ক্লাবটিকে এগিয়ে দেওয়ার পরে প্রথমার্ধেই পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় ফেরান ভিক্টর পেরেজ আলোন্সো। ৪৮ মিনিটে গোকুলম ১০ জন হয়ে গেলেও বাকি সময়ে জয়ের খোঁজ পায়নি ইস্ট বেঙ্গল। বরং বলা চলে, লাল-হলুদ আক্রমণভাগে মার্কোস একাই দলকে ডুবিয়ে দিলেন। এদিনের ড্র’য়ের ফলে ১৫ ম্যাচে ২০ পয়েন্টে পৌঁছল ইস্ট বেঙ্গল। আর গোকুলমের সংগ্রহ ১৪ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট।
মরশুমের শুরু থেকেই ইস্ট বেঙ্গলকে বারবার ডিফেন্সের ব্যর্থতায় ভুগতে হয়েছে। এদিনও তার কোনও পরিবর্তন ঘটল না। ৯ মিনিটের মধ্যেই গোকুলামকে এগিয়ে দেন মার্কাস জোসেফ। মূলত লাল-হলুদ ডিফেন্সে দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের বোঝাপড়ার অভাবকে কাজে লাগিয়েই লম্বা শটে বল জালে জড়ান এই ত্রিনিদাদ ও টোবাগো স্ট্রাইকার (১-০)। পরের মিনিটেই ফের গোলের সুযোগ পেয়েছিল গোকুলাম। এবার অবশ্য দলের পতন আটকান গোলরক্ষক মির্শাদ মিচু। এরপরই চোট পেয়ে গুরবিন্দর মাঠ ছাড়তে রোহলুপুইয়াকে নামিয়ে কাসিমকে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে খেলান কোচ মারিও। গত ম্যাচে ভিক্টর-হুয়ান-কোলাডো ত্রয়ী নজর কেড়েছিলেন। এদিনও তাঁদের হাত ধরে ম্যাচে সমতায় ফেরে মারিও রিভেরার ছেলেরা। ২৪ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে হুয়ান মেরাকে ফাউল করেন গোকুলামের নাচো সিং। পেনাল্টি পায় ইস্ট বেঙ্গল। যা থেকে গোল করেন ভিক্টর পেরেজ আলোন্সো (১-১)। ম্যাচে সমতায় ফেরার পর প্রথমার্ধেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল। তবে আক্রমণভাগে মার্কোসের উপস্থিতিতে সেই সব হেলায় নষ্ট হয়।
কল্যাণীতে হেনরি কিসেক্কারা হেলায় হারিয়ে গিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলকে। ফল হয়েছিল গোকুলমের পক্ষে ৩-১। আশা করা গিয়েছিল সেই হারের বদলা নেবেন খুয়ান মেরারা। হল ঠিক উল্টো। শুরুতেই গোল খেয়ে যান সামাদ আলি মল্লিকরা। মার্কোস জোসেফের বাঁক খাওয়া শট গোলে ঢোকে। গোলটার জন্য লাল-হলুদ রক্ষণের সঙ্গে গোলকিপার মিরশাদও দায়ী। এর পরেই রক্ষণ থেকে গুরবিন্দর সিংহকে তুলে নিতে বাধ্য হন দলের কোচ। গোকুলমের পক্ষে ম্যাচ ২-০ করার সুযোগ এরপরই পেয়েছিলেন মার্কোস। হেনরি কিসেক্কা বল বাড়িয়েছিলেন গোকুলম স্ট্রাইকারকে। কিন্তু তা মিরশাদের হাতে লেগে পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। পেনাল্টি থেকে ১-১ করে ইস্টবেঙ্গল। খুয়ান মেরা বল ধরে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। তাকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করেন গোকুলমের হুলড্রম নওচা সিংহ। রেফারি পেনাল্টি দেন, কার্ডও দেখান দক্ষিণী দলের ডিফেন্ডারকে। বিরতির চার মিনিট পর ফের খুয়ানকেই ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বাইরে চলে যেতে হয় হুলড্রম নওচা সিংহকে। গোকুলম দশ জনে খেলতে শুরু করে। আশা করা গিয়েছিল এই সুযোগ নিতে পারবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু নির্ধারতি সময় এবং তার পরের অতিরিক্ত চার মিনিট সময় পেয়েও কিছু করতে পারেননি মার্কোসরা। ম্যাচের শেষ মিনিটে লালকার্ড দেখেন গোকুলমের জোহিব ইসলাম আমিরি।
জনি অ্যাকোস্টা কলকাতায় এসে গেলেও টিমের সঙ্গে এখনও যোগ দেননি। তবে ৯ মার্চ রিয়াল কাশ্মীর কিংবা ১৫ মার্চ মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এই কোস্টা রিকার ডিফেন্ডারকে কতটা দরকার, তা বোঝা গেল এই ম্যাচেও। মার্কাস, হেনরি, গার্সিয়াদের সামলাতে হিমশিম খেল ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স।