কথায় আছে, একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। ঠিক একই হাল এখন ভারতীয় অর্থনীতির। একে তো চাহিদার অভাবে ভুগছিল বাজার, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনাভাইরাসের কারণে জোগান সঙ্কট। আর ওই জোড়া ফলায় চলতি অর্থবছরে অর্থনীতির বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের নীচে নামতে পারে বলে সোমবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ সলিউশনস। ওই একইদিনেই লন্ডনের অর্থনীতি বিশ্লেষক সংস্থা আইএইচএস মার্কিট তাদের ভারতীয় ম্যানুফ্যাকচারিং পার্চেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) রিপোর্টে জানিয়েছে, দেশের অর্থনীতির আশু ভবিষ্যত নিয়ে বিভিন্ন কলকারখানার পার্চেজিং ম্যানেজারদের মধ্যে হতাশা বেড়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে।
প্রসঙ্গত, কলকারখানার পার্চেজিং ম্যানেজরারা কাঁচামাল কেনা, কর্মী নিয়োগ করা প্রভৃতি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সেই সমীক্ষার ভিত্তিতে আইএইচএস মার্কিট তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং পার্চেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স বা সূচক নির্ধারণ করে। ওই সূচক ৫০-এর উপরে থাকার অর্থ অর্থনীতির বৃদ্ধি এবং নীচে থাকার অর্থ অর্থনীতির সঙ্কোচন। জানুয়ারি মাসে ওই সূচক ছিল গত আট বছরের সর্বোচ্চ ৫৫.৩ পয়েন্টে। ফেব্রুয়ারি মাসে তা কমে হয়েছে ৫৪.৫ পয়েন্ট। আইএইচএস মার্কিটের মুখ্য অর্থনীতিবিদ পলিয়ানা দে লিমা বলেন, ‘ভারতে কলকারখানাগুলি বিভিন্ন বাজার থেকে বিশেষ করে বিদেশ থেকে নতুন বরাত পাওয়ার গতি কমেছে। এর কারণ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্ক। ওই সংক্রমণের আতঙ্ক এখন চিনের বাইরে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলিতেও ছড়িয়েছে।’
এর ফলে, দেশের কলকারখানাগুলিতে নতুন কর্মী নিয়োগ গত তিন মাসের তলানিতে নেমে এসেছে। শুধু আইএইচএস মার্কিটের পিএমআই সূচকই নয়। ফেব্রুয়ারিতে দেশে অর্থনৈতিক কাজকর্ম স্লথ হয়ে আসার ছবি ধরা পড়ে জিএসটি আদায়ের পরিসংখ্যানেও। ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারের মোট জিএসটি আদায় হয়েছে ১,০৫,৩৬৬ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে ওই আদায়ের পরিমাণ ছিল ১,১০,৮২৮ কোটি টাকা। এই নিয়ে পর পর চার মাস জিএসটি আদায় ১ লক্ষ কোটি টাকার ওপর থাকলেও, ফেব্রুয়ারি মাসে আমদানি খাতে জিএসটি আদায় হয়েছে ২০,৭৪৫ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে ওই পরিমাণ ছিল ২৩,৪৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ, জানুয়ারির তুলনায় আমদানি অনেকটাই কমেছে ফেব্রুয়ারিতে।