যেখানে তিনদিন আগেও সুখের সংসার ছিল সেখানে এখন কেবল পড়ে আসবাবপত্রের ছাই। দিল্লীর সংঘর্ষে যে কয়েক হাজার মুসলিম পরিবারকে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন মহম্মদ আনিস। তাদের পরিবারও আশা করেছিল, বাড়ির বাইরে থাকা নেমপ্লেট হয়তো দাঙ্গাবাজদের রুখে দেবে। কেননা বাড়ির বাইরে মহম্মদ আনিসের নামের পাশে ‘বিএসএফ’ কথাটিও লেখা ছিল।কিন্তু ২৫ জানুয়ারি যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লীর খাস খাজুরি গলিতে উন্মত্ত জনতা ঢুকেছিল, তখন সেই আগুন থেকে কোনও বাড়িই রক্ষা পায়নি। এমনকি ‘বিএসএফ’ লেখা বা তাঁর পদকের চিহ্নও বাঁচাতে পারল না ওই জওয়ানের বাড়িকে। এই ঘটনায় ওই জওয়ানকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে বিএসএফ।
বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই জওয়ানের বাড়ি ফের তৈরি করে দেওয়া হবে এবং আর্থিকভাবেও তাঁকে সাহায্য করা হবে। জানা গিয়েছে, সংঘর্ষে বাড়ি ভাঙা হলেও সে কথা প্রথমে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের জানাননি আনিস। কিন্তু তাঁরা পরবর্তী সময়ে খবর পেয়েই তাঁর সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। বিএসএফ-এর তরফে জানানো হয়েছে, ওই জওয়ানের বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাঁর বাবা, কাকা সহ গোটা পরিবারকে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিএসএফ ডিরেক্টর জেনারেল জানিয়েছেন, তাঁদের তরফ থেকে আনিসের বাড়ি ফের তৈরি করে দেওয়া হবে, পাশাপাশি আর্থিকভাবে সকলকে সাহায্য করা হবে। সেই প্রেক্ষিতে বিএসএফ জওয়ান আনিসকে সোমবার ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেবে বিএসএফ।
খাজুরি খাস লেনে আনিসের বাড়ির পাশাপাশি পরপর ৩৫টি বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মাত্র একটি মুসলিম বাড়ি বাদ রাখা হয়েছিল। বাড়ির জিনিসপত্র সব শেষ হয়ে গেলেও প্রাণে বেঁচে থাকাই এখন আনিসের পরিবারের সবথেকে বড় প্রাপ্তি। আগামী তিন মাসে দু’টি বিয়ে হওয়ার কথা তাদের পরিবারে। এপ্রিল প্রথমে তাঁর বোন নেহা পারভিনের বিয়ে। এরপর আনিস নিজেও বিয়ে করবেন।