ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রদায়িক নীতি নিয়ে গণবিক্ষোভ গোটা একটি এলাকার জনজীবন বিপন্ন করে তুলেছে। বাড়িয়ে তুলেছে ধর্মীয় বিভাজন, মৃত্যুমিছিল। দিল্লীর হিংসার খবর চাউর হওয়ার পর থেকে ঠিক এই ভাষাতেই মোদীর সমালোচনায় সরব হতে দেখা যাচ্ছে নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্টের মত আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলিকে। এরই মধ্যে এবার মোদীকে ‘স্বীকৃত দাঙ্গাবাজ’ বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। ‘মোদীর হাতে মানুষের রক্ত লেগে আছে’, এমন মন্তব্যের পাশাপাশি নুরুল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মোদী এলে ছাত্রসমাজে রক্তের গঙ্গা বয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর মতো একটি অনুষ্ঠানে মোদীকে অংশ নিতে দেব না।’ বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরাও তাঁকে দেশে না আনার দাবি জানিয়েছেন।
‘ভারতের সাম্প্রদায়িক মোদী সরকার কর্তৃক ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে আন্দোলনরতদের ওপর হামলা ও হয়রানি’র প্রতিবাদে ভিপি নুরুলের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ এক সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে নুরুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কোনও দলের নেতা নন, সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের নেতা। তিনি বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের নেতা। আমরা যে যে দলই করি না কেন, এ দেশের মানুষের মুক্তিসংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অস্বীকার করতে পারি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘মোদী একজন সাম্প্রদায়িক, দাঙ্গাবাজ। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের মদতে পুষ্ট মোদীর দল বিজেপি দীর্ঘ দিন ধরে ভারতকে একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে মোদী বাংলাদেশে এলে, বাংলাদেশের মানুষকেই অপমান করা হবে, বঙ্গবন্ধুকে করা হবে অসম্মান।’
এদিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে কীভাবে নরেন্দ্র মোদীর মতো ঘৃণ্য ব্যক্তিকে প্রধান বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ করা হয়, বুঝি না। আজ এ দেশে মোদীকে আমন্ত্রণ করা মানে শেখ মুজিবকে অপমান করা।’ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এই কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি অসম্মান আমরা মেনে নিতে পারি না। আশা করছি আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নেবেন। তা না করলে এ দেশের মানুষ বাধ্য হবেন ‘নরেন্দ্র মোদী ফিরে যাও’ আন্দোলন করতে।