দিল্লীর হিংসায় মৃত্যুমিছিল যেন কিছুতেই থামছে না। গতকাল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল পথে নেমে কিছুটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছিলেন। তাতে সামান্য লাভ হলেও মৃতদেহ এখনও উদ্ধার হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লীর গঙ্গাবিহার এলাকার নর্দমা থেকে ২টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। দুটি দেহই সম্পূর্ণ পচা-গলা অবস্থায় ছিল। এখনও পর্যন্ত কারোর পরিচয় জানা যায়নি। সব মিলে দিল্লীতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫।
মনে করা হচ্ছে, আগামী সময়ে আরও কিছু দেহ ওই নর্দমা থেকে উদ্ধার হতে পারে। সেই কারণে গোটা এলাকায় বিরাট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই মনে করিয়ে দেওয়া যায়, গতকালও দিল্লীর চাঁদবাগ এলাকা থেকে একটি দেহ উদ্ধার হয়েছিল। পরে জানা যায় সেই দেহ দিল্লী পুলিশের এক গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারের। তাঁর নাম অঙ্কিত শর্মা, বয়স ২৬। একইভাবে আরও প্রচুর মানুষকে হত্যা করে খালে ভাসিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতের রাজনীতির রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। যথাসম্ভব সংযম রাখার বার্তা দিয়েছে তারা। তবে গত কালের পরও যে শান্তি ফিরে আসেনি, তা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। গতকাল রাত থেকে দিল্লীর মৌজপুর, ব্রহ্মপুরী, ভজনপুরা চক, গোকুলপুরী-সহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে দফায় দফায় সংঘর্ষ। এদিন সকালে জিটিবি হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়েছে, আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব। উত্তর পূর্ব দিল্লী কার্যত থমথমে মৃত্যুপুরীতে রূপান্তরিত হয়ে রয়েছে। এরই মধ্যে শান্তির আবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী-সহ অনেকেই। কিন্তু শান্তি ফেরার কোনও লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না।
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০-র বেশি আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ১৫০-র বেশি মানুষ গুলিবিদ্ধ। দুর্গতদের সাহায্যার্থে দিল্লী পুলিশের তরফে দুটো হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। যে কোনও বিপদে পড়লে ০১১-২২৮২৯৩৩৪, ২২৮২৯৩৩৫ এই দুই নম্বরে ফোন করা যাবে। এ দিনও জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, গোকুলপুরী, জোহরি এনক্লেভ এবং শিব বিহার মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লীর সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলও বন্ধ রাখা হয়েছে। একাধিক জায়গায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা।