এই মুহূর্তে উড়িষ্যা সফরে রয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দেশের মঙ্গল কামনায় পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরে পুজো দিয়েছেন তিনি। আর শুক্রবার ভুবনেশ্বরের লোকসেবা ভবনের নিউ কনভেনশন সেন্টারে হতে চলা ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের (ইজেডসি) গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দেবেন মমতা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত হতে চলা ওই বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল উড়িষ্যা, বাংলা, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী-সহ শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের। সেই বৈঠকে যোগ দিতেই উড়িষ্যা সফর মমতার।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৬ সালের স্টেট রিঅর্গানাইজেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী গোটা দেশকে পাঁচটি জোনাল কাউন্সিলে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিবেশী রাজ্যগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি এবং সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে এবার ইজেডসি’র ২৪তম বৈঠক। ২৩তম বৈঠকের আয়োজক ছিল বাংলা। তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের পৌরোহিত্যে বৈঠকটি হয়েছিল নবান্ন সভাঘরে।
নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্যের উন্নতির সঙ্গে সম্পর্কিত নানা বিষয়, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ হ্রাস সহ বকেয়া রেল, সেচ সহ নানা প্রকল্পের দ্রুত রূপায়ণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণের মতো একাধিক বিষয় নিয়ে ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরব হবেন বাংলার প্রতিনিধিরা। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ইজেডসি’র বৈঠকে রাজ্যগুলির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচিত হয়। সেক্ষেত্রে দিল্লীর বিঘ্নিত নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে কোনও প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন কি না, এখন সেটাই দেখার।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪তম ইজেডসি’র বৈঠকের আগে গত বছরের অক্টোবর মাসে বিহারের পাটনায় সংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্ট্যান্ডিং কমিটির একাদশতম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে ইজেডসি’র বিগত বৈঠকের আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখা এবং আগামী বৈঠকের প্রস্তুতির রূপরেখা রচিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির ওই বৈঠকে বাংলার প্রতিনিধি সেচদফতরের প্রধান সচিব নবীন প্রকাশ রাজ্যের বকেয়া বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সরব হয়েছিলেন।
যেমন প্রস্তাবিত তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর এবং ভাদুতলা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ, বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ এবং জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ির মহানন্দা বাঁধের জলবণ্টন নিয়ে বিহারের সঙ্গে চুক্তির প্রসঙ্গ সেই বৈঠকে উত্থাপিত হয়েছিল। এবার ইজেডসি’র পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে ফের এই বিষয়গুলি সামনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
ওই সূত্রটি জানিয়েছে, দীর্ঘ টালবাহানার পরে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া বাগডোগরা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ কোটি টাকা দিতে রাজি হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কিন্তু বকেয়া রেল ও সেচপ্রকল্প নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা রাজ্যের উন্নয়নের পক্ষে সহায়ক হচ্ছে না। ভুবনেশ্বরের বৈঠকে এই প্রসঙ্গগুলির সঙ্গেই সীমান্ত চৌকির জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থানের বিষয়টিও আলোচিত হবে। জমির সংস্থান সময়মতোই যে করে দেওয়া হয়েছে, সে সংক্রান্ত কাগজপত্র ওই বৈঠকেই তুলে ধরা হবে।