দিল্লীর সংঘর্ষে নিহত কনস্টেবল রতনলালকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে৷ না হলে পরিবার শেষকৃত্য করবে না৷ পরিবারের সদস্যরা রাজস্থানে তাঁর গ্রামে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে৷ রাজস্থানে রতনলালের পরিবার সিকার জেলার সাদিনসার গ্রামে রাস্তা অবরোধ করেন৷ তাঁদের দাবি, শহীদের মর্যাদা না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা দেহ দাহ করতে দেবেন না৷ সিনিয়র পুলিশ অফিসার ও জেলা প্রশাসন পরিবারের লোকদের রাস্তা খালি করার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করেন৷ কিন্তু গ্রামবাসীরা তাঁদের দাবিতে অনড় থাকেন।
রাজস্থানের সিকার জেলার ফতেপুর তিহওয়ালি গ্রামের বাসিন্দা রতনলাল ১৯৯৮ সালে দিল্লী পুলিশে যোগ দেন। পরে ২০০৪ সালে জয়পুরের বাসিন্দা পুনমের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর৷ রতনলালের মৃত্যুর খবর বুরারির অমৃত বিহার কলোনীতে তাঁর বাড়িতে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে ৩ সন্তান কাঁদতে শুরু করে। দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকার্ত পরিবারের পাশে থাকার জন্যে তাঁর ছোট ভাই বেঙ্গালুরু নিবাসী মনোজ দিল্লীতে চলে আসেন।
সিএএ সমর্থক ও বিরোধীদের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মৃত্যু হয় গকুলপুরী থানার হেড কনস্টেবলের। আহত দিল্লী পুলিশের ডিসিপি। নিহত কনস্টেবল রতনলালের মৃত্যুতে তোলপাড় শুরু হয়েছে৷ প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সিএএ বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে ইটবৃষ্টি চলছিল। তার মাঝে পড়ে যান ওই কনস্টেবল। মাথায় আঘাত লাগে তাঁর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত ডিসিপি-ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অসময়ে রতনলালে এই মৃত্যু মানসিক দিক থেকে একেবারে ভেঙেচুরে দিয়েছে তাঁর পরিবারকে। বাবার কী দোষ ছিল, কাঁদতে কাঁদতে অবাক চোখে পুলিশ কমিশনারকে জিজ্ঞাসা করে রতনলালের সন্তানেরা। সিদ্ধি, কনক এবং রাম- বাবার মৃ্ত্যুতে রীতিমতো বিপর্যস্ত তাঁরা। রতনলালের মৃত্যুসংবাদ শুনেই অজ্ঞান হয়ে যান তাঁর স্ত্রী পুনম। রতনলালের পরিচিতদের মতে, একেবারে শান্তিপ্রিয় মানুষ ছিলেন তিনি এবং কখনও কোনও লড়াই বা তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়তেন না ওই পুলিশ কর্মী। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ নিয়ে যখন পূর্ব দিল্লীতে হিংসা-হানাহানি চলছিল, তখনই দয়ালপুর থানার কাছে ওই হেড কনস্টেবলের উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ।