রাজধানীর নির্বাচনী প্রচারে একাধিক বার বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের মুখে এই মন্তব্য শোনা গিয়েছিল যে, দিল্লীর নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় না এলে আবার মুঘল শাসন কায়েম হবে। দিল্লী ভোটে গোহারা হারলেও, জারি বিজেপির সেই মুঘল বিদ্বেষ। এবার মুঘল জমানায় তৈরি শিসমহলের সংস্কার কাজ নিয়ে খড়্গহস্ত গেরুয়া শিবির।
প্রসঙ্গত, উত্তর-পশ্চিম দিল্লীর শালিমারবাগে রয়েছে ১৭০০ শতাব্দীর প্রাসাদ শিসমহল। যা তৈরি করিয়ে ছিলেন শাহজাহানের পত্নী আকবরাবাদী বেগম। উত্কৃষ্ট ফলের বাগান, সঙ্গে প্রমোদ উদ্যান। ১৬৫৮ খ্রীস্টাব্দে এই শিসমহলে ষষ্ঠ মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজ্যাভিষেক হয়। শালিমার বাগের সুবিশাল চেহারা আর নেই। বেঁচে থাকা ১৮০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে পার্ক। আর শিসমহলের অবস্থাও খুব খারাপ। একাংশ কার্যত পরিত্যক্ত। দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে চুন পলেস্তরা। বেরিয়ে এসেছে পুরনো লখোরি ইট।
শিসমহলের এমন হাল দেখেই সংস্কারে হাত লাগিয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। কিন্তু সে খবর জানতে পেরেই তত্পর দিল্লী বিজেপি। ঔরঙ্গজেবের রাজ্যাভিষেক হয়েছিল যে প্রাসাদে তার তীব্র বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক, স্থানীয় সাংসদ, দিল্লীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে দিল্লী বিজেপির মুখপাত্র প্রবীণ শঙ্কর কাপুর লিখেছেন, পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিপুল টাকা খরচ করে শিসমহলের পুনর্নির্মাণ করছে। ঔরঙ্গজেবের মতো নিষ্ঠুর শাসকের স্মৃতি উদযাপন করা উচিত নয়।
উল্লেখ্য, এর আগে দিল্লির ঔরঙ্গজেব রোডের নাম বদলে এপিজে আবদুল কালাম রোড করেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন নয়া দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিল। এবার শিসমহল সংস্কারের ঘোর বিরোধী বিজেপি। চিঠিতে দলের তরফে লেখা হয়েছে, শিসমহল লাগোয়া বাগান ও জলাশয় সংস্কার নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। উন্নয়ন হলে শালিমারবাগের মানুষ ভাল পার্ক পাবেন। কিন্তু শিসমহল সংস্কারের সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখা হোক।