মেদিনীপুর শহরের খানকাহ শরিফে ১৫৬তম বাৎসরিক উরস শরিফ উপলক্ষ্যে চলতি সপ্তাহেই বাংলাদেশ থেকে দলে দলে তীর্থযাত্রীরা এসেছেন এই বাংলায়। সেই অনুষ্ঠানই আয়োজিত হল গতকাল। এই উৎসবে বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত সর্বধর্ম সমন্বয় শান্তির প্রার্থনা করা হয়। যেখানে নাম না করেও চলে আসে এনআরসি-সিএএ প্রসঙ্গ।
দেশ-বিদেশের বহু পুণ্যার্থী-সহ রাজ্যের বিভিন্ন পদাধিকারী ব্যক্তিরাও গতকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে মুখ্য অতিথি হিসেবে পঞ্চায়েত দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান, কৃষি দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মীর দারাশিকো, জেলা বিচারক কাজী রফিক আহমেদ, বিধায়ক ইদ্রিস আলি-সহ অন্যান্যরা ছিলেন।
এদিন পঞ্চায়েত মন্ত্রী তাঁর নিজের বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশ একটা বিপদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যার বিরুদ্ধে সবাই মিলে একটা সংগ্রাম করতে হবে। এই সংগ্রামে আমরা জিততে পারব আল্লা, ভগবান, যিশুর আশীর্বাদ নিয়ে। কারণ মানুষকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা কোনও মানুষের নেই। কেউ কেউ নিজেকে এত বেশি ক্ষমতাবান মনে করে যে, তাঁরা নিজেদের ভগবানের ওপরে ভাবতে থাকে। এই ধারণা থেকেই তাঁরা দেশের জনগণের ক্ষতি করতে চায়।’ এদিন নাম না করে যে তিনি বিজেপির সাম্প্রতিক ক্রিয়াকলাপের কথাই বলেছেন, তেমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন যে, ‘মনে রাখবেন আল্লাহ যখন আশীর্বাদ করেন শুধু মুসলিম দেখে আশীর্বাদ করেন না, ভগবানও যখন আশীর্বাদ করেন শুধু হিন্দু দেখে আশীর্বাদ করেন না। মানুষ দেখে আশীর্বাদ করেন।’ কেন্দ্রের সিএএ ও এনআরসি-র কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘একটা বিপদের মধ্য দিয়ে দেশ যাচ্ছে। তার জন্য যে লড়াই তা শুধু আপনার বা আমার নয়, উভয়ের।’
তিনি বলেন, ‘এনআরসি ও সিএএ নিয়ে মুসলিমরা লড়াইয়ে অনেক স্থানে এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু না, এলাকায় এলাকায় প্রমাণ করতে হবে যদি গুলি চলে আগে হিন্দু মরবে, তারপরে মুসলিম গুলি খাবে, তারপরে খ্রিস্টান। তবেই এই লড়াই ভারতবর্ষের হবে। না হলে যে মুহূর্তে লড়াই একটা সম্প্রদায়ের হবে, সেই মুহূর্ত থেকে আমরা হেরে যাব।’ এভাবেই কেন্দ্রের এই মানবতা বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জোট বাঁধার কথা বলেন তিনি।