ভুবনেশ্বরে বাংলা যে হোটেলে উঠেছে, সেখান থেকে মাঠের দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। মঙ্গলবার দুপুরে অভিমন্যু ঈশ্বরন, ঈশান পোড়েলদের মাঠে আসতে সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা। বাংলা শিবিরে উদ্বেগ, পাঁচ দিনের ম্যাচ খেলতে আসার জন্য প্রত্যেক দিন ক্রিকেটারদের ভোর পাঁচটার মধ্যে ঘুম থেকে উঠতে হবে। না হলে ঠিক সময় মাঠে পৌঁছনো যাবে কি না সন্দেহ।
মঙ্গলবার সকালে অনুশীলন করেছে উড়িষ্যা। দুপুরে ছিল বাংলার। কোচ অরুণ লাল শুরুতেই নীচের সারির ব্যাটসম্যানদের আগে ব্যাট করিয়ে নেন। কারণ, বাংলার ওপরের সারি এখনও সে ভাবে জ্বলে ওঠেনি। রান করেছেন মাঝের সারির ব্যাটসম্যানেরা। কোয়ার্টার ফাইনালে প্রয়োজনে নীচের সারির ব্যাটসম্যানদেরও দায়িত্ব থাকবে বড় জুটি গড়ার। মুকেশ, ঈশানরা ব্যাট করে বেরনোর পরেই নেটে প্রবেশ করেন অভিমন্যু, কৌশিক ঘোষরা। সিএবি-র প্রথম ডিভিশন লিগের ম্যাচ থাকার জন্য রাতে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বরে ফেরানো হতে পারে তাঁকে। কোচ বলছিলেন, ‘‘সুদীপ নিজের ছন্দ ফিরে পেয়েছে। স্থানীয় ক্রিকেটে রান করেছে বলেই ওকে নেওয়া হয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালের আগে ওর মতো ছন্দে থাকা ব্যাটসম্যানই আমাদের প্রয়োজন ছিল। আশা করি, নিজেকে প্রমাণ করবে ও।’’
বোর্ড অনুমোদিত পিচ প্রস্তুতকারক এল প্রশান্ত জানিয়ে দিলেন, শক্ত মাটি দিয়ে বানানো হয়েছে এই বাইশ গজ। যেখানে শুরুর দিকে পেসারেরা সাহায্য পাবেন। সমস্যায় ফেলবে বাউন্স। সকালের দু’ঘণ্টা পরে পিচ হয়ে উঠবে ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ। প্রশান্তের কথায়, ‘‘এই পিচে সামান্য ঘাস রাখা হয়েছে আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য। কটকের বাতাসে আর্দ্রতা কম। এই ঘাসই পিচকে পাঁচ দিনের ম্যাচের জন্য আদর্শ করে তুলবে।’’ যোগ করেন, ‘‘এই উইকেট থেকে স্পিনারেরা সে রকম সাহায্য পাবে না। মাটি একেবারে শক্ত। সকালের আর্দ্রতা কাজে লাগিয়ে পেসাররা কিছুটা প্রভাব ফেলবে। বাউন্সও পাবে। লাঞ্চের পর থেকে একেবারে ব্যাটিং-সহায়ক উইকেট হয়ে যেতে পারে।’’
পিচ থেকে বাউন্স পাওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে মুখে এক গাল হাসি ঈশান পোড়েলের। বাউন্সই তাঁর অস্ত্র। সতীর্থ আকাশ দীপের চোট এখনও সারেনি। এ দিন অনুশীলনে দৌড়তেও পারছিলেন না তিনি। সে ক্ষেত্রে মুকেশ কুমার ও ঈশানকে বিপক্ষ শিবিরে ত্রাস তৈরি করার কাজ করতে হবে। কিন্তু বিপক্ষেরও অস্ত্র তো তাদের পেস আক্রমণ। ড্রিমস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যে চারটি ম্যাচ উড়িষ্যা খেলেছে, পেসাররাই পেয়েছেন ৬৭টি উইকেট। বাংলার বিরুদ্ধে গতির পিচ দেখে তাঁরাও নিশ্চয়ই প্রসন্ন।