ঠিক যেন অশ্বমেধের ঘোড়া। নিজের গতিতে ছুটেই চলেছে। সামনে যে প্রতিপক্ষই আসুক না কেন, তাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ঠিক নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। কল্যাণীতে ফের একবার সেই ছবিটা দেখা গেল। নেরোকা এফসিকে ৬-২ গোলে হারিয়ে আইলিগের শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করল কিবু ভিকুনার ছেলেরা। একইসঙ্গে লিগ জয়ের দিকে এগিয়ে গেল আরও এক ধাপ।
এদিন খেলার প্রথম ১৫ মিনিটেই ম্যাচ নিজেদের পকেটে পুড়ে নেয় মোহনবাগান। শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণ। ১০ মিনিটের মাথায় বেইতিয়ার কর্নার থেকে হেডে গোল করে বাগানকে এগিয়ে দেন ফ্রান গঞ্জালেজ। দু’মিনিট পরেই ফের বেইতিয়ার কর্নার থেকে তুরসুনভের ভলিতে হেড করে ব্যবধান বাড়ান ফ্রান মোরান্তে। দেখে মনে হচ্ছিল মোহন ফুটবলারদের সুনামি আছড়ে পড়ছে নেরোকা বক্সে। ২৩ মিনিটে ফের বেইতিয়ার ক্রসে হেডে গোল করে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল করেন ফ্রান গঞ্জালেজ। ২৫ মিনিটেই নিজের হ্যাটট্রিক পেতে পারতেন গঞ্জালেজ। তাঁকে বক্সের মধ্যে ফাউল করায় পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু মিস করেন গঞ্জালেজ।
১০ মিনিট পরেই অবশ্য ব্যবধান ৪-০ করেন পাপা বাবাকার দিওয়ারা। ডান প্রান্ত ধরে সুহেরের চিপ বুক দিয়ে নামিয়ে ডান পায়ের ভলিতে এদিন নিজের প্রথম গোল করেন বাবা। দেখে মনে হচ্ছিল নেরোকাকে প্রথমার্ধেই গোলের মালা পরাবে মোহনবাগান। কিন্তু ৪০ মিনিটের মাথায় কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে শঙ্কর রায়ের বাঁ দিক দিয়ে জোরালো শটে গোল করে নেরোকার হয়ে প্রথম গোল দেন ফিলিপ আদজা। তবে প্রথমার্ধের শেষেই বেইতিয়ার ক্রস থেকে ডান পায়ের ছোট্ট টোকায় নিজের হ্যাটট্রিক করেন গঞ্জালেজ। তারপরের মিনিটেই ফের খেলায় ফেরে নেরোকা। গোল করে ব্যবধান ২-৫ করেন সুভাষ সিং।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই ছবি দেখা যায়। বাগান ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে পাসিং ফুটবল খেলতে থাকেন। তারমধ্যেই ধাক্কা খায় বাগান ডিফেন্স। বক্সের মধ্যে ফাউল করায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় বাগান অধিনায়ক ধনচন্দ্র সিংকে। পেনাল্টি পায় নেরোকা। আদজার পেনাল্টি বাঁচিয়ে দেন শঙ্কর। তারপরে দলে কিছু বদল ঘটান সবুজ-মেরুন কোচ কিবু ভিকুনা।
নওদম্বা নওরেমের জায়গায় রোমারিও জেসুরাজকে নামান ভিকুনা। পরিবর্ত হিসেবে নেমে প্রথম টাচে গোল করে বাগানের হয়ে ৬ নম্বর গোল করেন রোমারিও। তারপরেও দুই দল গোল করার অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু গোল আসেনি। এমনকি একা গোলকিপারকে পেয়েও গোলে বল ঠেলতে ব্যর্থ হন পাপা। শেষ পর্যন্ত ৬-২ ব্যবধানেই মাঠ ছাড়লেন বাগান প্লেয়াররা। তবে এই সাফল্যের মধ্যে একটাই খামতি দেখা গেল সবুজ-মেরুন শিবিরে। ড্যানিয়েল সাইরাস না থাকায় কিছু প্রশ্ন উঠে গেল বাগান রক্ষণ নিয়ে।