একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও সভ্য দেশের কোনো এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে এমন মধ্যযুগীয় ভাবনা জায়গা পায়, সে কথা বিশ্বাস করতে অসুবিধা হয়। ঘটনাস্থল গুজরাতের ভুজের সহজানান্দ গার্লস ইনস্টিটিউটের হস্টেল। কলেজের ৬৮ জন ছাত্রীকে লাইন করে দাঁড় করিয়ে খোলানো হল অন্তর্বাস। পরীক্ষা করে দেখা হল, তাঁদের পিরিয়ডস হয়েছে কিনা! আমরা সমাজের ঠিক কোন স্তরে বসবাস করছি, বা কোন নিম্মপর্যায়ে নেমে গেছে আমাদের মানসিকতা, তার আবারও প্রমাণ পাওয়া গেল।
জানা গেছে, সোমবার মোদীরাজ্যের এই হস্টেলের বাইরে একটি বাগানে একটি ভিজে স্যানিটারি প্যাড পাওয়া যায়। সন্দেহ করা হয়, হস্টেলের বাথরুমের জানালা দিয়ে কোনও ছাত্রী সেটি বাইরে ফেলে দিয়েছেন। কে এই কাজ করেছে, তা জানার চেষ্টা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। জানতে না পেরে, ওই কলেজের হস্টেলের রেক্টর অধ্যক্ষ রীতা রানিগার কাছে অভিযোগ করেন, যে কয়েক জন ছাত্রী হস্টেলের ধর্মীয় রীতি লঙ্ঘন করছে, বিশেষ করে ঋতুমতী মহিলারা।
ছাত্রীরা জানান, অধ্যক্ষ রীতা এর পরে সব মেয়েকে ডকে পাঠান কমনরুমে। খানিকক্ষণ ভাষণ দেওয়ার পরে অন্তর্বাস খুলতে বলেন। প্রথমে সকলেই চমকে যান। তার পরে চাপের মুখে দু’জন ছাত্রী খুলে ফেলেন। এর পরেই রীতা ও অন্য মহিলা শিক্ষকরা পরপর ছাত্রীদের অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করান।
এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সামনে এসেছে আরও ভয়ানক তথ্য। ছাত্রীরা জানিয়েছেন, পিরিয়ডস হলে কলেজের হস্টেলের ঘরে শুতে দেওয়া হয় না কাউকে। ওই কয়েক দিনের জন্য হস্টেলের নীচে বেসমেন্টে শুতে হয় ওই ছাত্রীদের। তাঁদের রান্নাঘর ও পুজো-অর্চনার জায়গায় তো যেতে দেওয়াই হয় না, সকলের সঙ্গে মিশতেও দেওয়া হয় না।
এই লজ্জাজনক ঘটনার প্রেক্ষিতে এক ছাত্রী জানান, “আমাদের কিছু বলার ভাষা নেই। এ এক চরম মানসিক নির্যাতন। আমরা লজ্জার শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি।”