সুতোয় ঝুলছে ৪০ কোটি ভারতবাসীর গোপন তথ্য। তা যে কোনও মূহুর্তেই চলে যেতে পারে কেন্দ্রের হাতের মুঠোয়। শুনলে মনে হবে যেন মগের মুলুক। কিন্তু আদতেই তাই। এবার মোদী সরকারের এক ইশারাতেই ফাঁস হয়ে যেতে পারে আমার-আপনার সব গোপনীয় তথ্যও। ভাবছেন কী করে সম্ভব? সম্ভব, কারণ আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে থাকার দৌড়ে আমরা নিজেরাই নিজেদের সব তথ্য তুলে দিই সোশ্যাল মিডিয়ার হাতে। আর সেই সোশ্যাল মিডিয়াই এবার সরকারের চালে ফাঁস করে দিতে পারে আপনার সব গোপনীয় তথ্য। ফেসবুক, টুইটার, টিকটকের মত অ্যাপ সংস্থার কাছে কেন্দ্রের তদন্তকারী যদি জানতে চায় আপনার গোপন তথ্য তাহলে তা খুব সহজেই তারা জানিয়ে দেবে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকার সোশ্যাল মিডিয়াকে নানাভাবে জবাবদিহি করার চেষ্টা করছে। তবে ভারতের নতুন নির্দেশিকা অন্যান্য দেশের চেয়ে আরও সাংঘাতিক। মোদী সরকারের নির্দেশিকা এই যে ‘সরকারী অনুসন্ধানের স্বার্থে সোশ্যাল মিডিয়াগুলির সহযোগীতা প্রয়োজন, এর জন্য কোনও ওয়ারেন্ট বা আদালতের আদেশের প্রয়োজন নেই। ভারত এই নির্দেশিকা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রস্তাব করেছিল এবং জনসাধারণের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিল।
তবে ফেসবুক আইএনসি, অ্যামাজন ডট কম আইএনসি, আলফাবেট আইএনসি এই সংস্থাগুলি এর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিল এতে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক স্বীকৃত গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন হবে। তবে জানা গিয়েছে এরপরেই দেশের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক এই মাসের শেষের দিকে কোনও বড় ধরণের পরিবর্তন ছাড়াই এ ধরণের নির্দেশিকা প্রকাশ করতে পারে। আর সরকার যদি এ ধরণের কোনও নির্দেশিকা জারি করে তাহলে এই আওতায় আসবে ভারতের প্রায় ৪০ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষ। তবে এদের মধ্যে কোনও বিদেশী থাকলে তারা এই নির্দেশিকার মধ্যে পড়বে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে বুধবার এক বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে তারা ইউজারের সুরক্ষার সাথে কোনও আপস করবে না। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, হোয়াটস অ্যাপের বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। সংস্থা জানিয়েছে, আরও সুরক্ষার জন্য, তারা শীর্ষ সুরক্ষা বিশেষজ্ঞদের সাথে কাজ করছে, এর অপব্যবহার বন্ধ করতে আরও উন্নত প্রযুক্তি নিয়োগ করছে এবং গোপনীয়তার ফাঁস করা ছাড়াই সমস্যাগুলি প্রতিরোধের ব্যাবস্থা নেওয়া হয় হোয়াটসঅ্যাপে।