টলিপাড়ায় গেরুয়া প্রভাব পড়ল না একফোঁটাও। রাজনীতির হিসেবনিকেশ সরিয়ে যোগ্যতম প্রার্থীকেই বেছে নিলেন আর্টিস্ট ফোরামের সদস্যরা। গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীদের অনেকটা পিছনে ফেলে ফোরামের কার্যকরী সভাপতি পদে বসতে চলেছেন শংকর চক্রবর্তী। সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পথে অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়া ভোটে অন্যান্য পদগুলিতেও এগিয়ে মূলত শাসক ঘনিষ্ঠ অভিনেতা, অভিনেত্রীরা। আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
রবিবার দিনভর ওয়েস্ট বেঙ্গল মোশন পিকচারস আর্টিস্ট ফোরামের নতুন কমিটি তৈরির জন্য ভোটগ্রহণ পর্ব চলেছে। সোমবার সকাল থেকে তার ফলাফল জানার অপেক্ষায় উৎসাহীরা। বেলা গড়াতেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল। গেরুয়াপন্থীদের হারিয়ে ফোরামের বিভিন্ন পদে কারা আসতে চলেছেন অর্থাৎ আগামী ২ বছরের জন্য কাদের হাতে থাকবে ফোরামের রাশ, তা বেশ বোঝা গেল। ফোরামের বিভিন্ন পদে বসছেন – কার্যকরী সভাপতি – শংকর চক্রবর্তী, সহ সভাপতি – পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক – অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়, সহ সম্পাদক – রানা মিত্র, দেবদূত ঘোষ, যুগ্ম সম্পাদক – শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, সপ্তর্ষি রায়, কার্যকরী সদস্য – কুশল চক্রবর্তী, জুন মালিয়া, সোনালি চৌধুরি, দিগন্ত বাগচি, সাগ্নিক।
আর্টিস্ট ফোরামের ভোট এবার একাধিক কারণেই সকলের নজরে ছিল। টলিপাড়ায় দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব তেমন না থাকলেও, সম্প্রতি তা উত্তরোত্তর বেড়েছে। বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সাংসদ হওয়াই তার প্রমাণ। টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রি মূলত শাসকদল ঘেঁষা। কিন্তু ইদানীং সেখানে গেরুয়া শিবিরের প্রভাবও বেশ পড়েছে। জনা কয়েক জনপ্রিয় মুখ সরাসরি নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে। দলীয় কর্মসূচিতেও তাঁদের বেশ দেখা যায়। এবারের ভোটে তাঁদের কেউ কেউ লড়াইয়ে ছিলেন। আশাবাদী ছিলেন নিজেদের জয় নিয়ে। কিন্তু বিফলে গেল সেই মনোবাসনা। বিভিন্ন পদের লড়াইয়ে যাঁরা এগিয়ে, তাঁরা প্রত্যেকেই মূলত তৃণমূলপন্থী। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে যে টলিপাড়াও শামিল, এই নির্বাচন সেটাই বুঝিয়ে দিল।